টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং কবে শিখবে বাংলাদেশ?

  25-01-2020 07:32PM

পিএনএস ডেস্ক : অনেক নাটকীয়তার পর আলোর মুখ দেখেছিল বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফর। প্রথম ধাপে সংক্ষিপ্ত সময়ের সফরে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে এখন পাকিস্তানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দুটি ম্যাচ শেষ হলো এরই মধ্যে। বাংলাদেশের টানা ‍দুই হারে হয়ে গেল সিরিজ নির্ধারণও।

শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটা তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই নিজেদের করেছে স্বাগতিকেরা। শুক্রবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। সোমবার সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটা এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতার।

লাহোরে দুই ম্যাচেই বাবর আজমের দলের জয় এক তরফাভাবে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা যেখানে কোনো লড়াই-ই জমাতে পারল না। কিন্তু বাংলাদেশের এই করুণ হাল কেন? আসলে কারণ সন্ধানে বড় ক্রিকেট বোদ্ধা হওয়ার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশ যে দুই ম্যাচের কোনোটিতেই টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিং করতে পারল না।

সদ্যই ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি আসর বিপিএল শেষ করে পাকিস্তানে গেছে বাংলাদেশ দল। নির্বাচকদের দাবি দল গড়া হয়েছে সেরা পারফরমারদের নিয়ে। যেখানে অভিজ্ঞতার সঙ্গে ছিল তারুণ্যের ছাপ। কিন্তু সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের স্কোয়াড ও একাদশ নির্বাচনে অদূরদর্শিতার ছাপও ফুটে উঠেছে।

নিরাপত্তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে সিরিজ শুরুর আগে। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বারবার বলেছেন, এই বিষয়টা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেছেন তারা। ভাবতে চান শুধু মাঠের খেলা নিয়ে।

ভারতের বিপক্ষে খেলা নিজেদের সর্বশেষ টি-টোয়োন্টি সিরিজকে প্রেরণা হিসেবে নিয়েছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু আদতে যার কোনো ছাপই পড়েনি বাংলাদেশের খেলায়। বরং অনেক প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে লাহোরের দুই ম্যাচ।

সবচেয়ে বড় প্রশ্ন নিজেদের ব্যাটিং দৈন্য নিয়ে। দুই ম্যাচের কোনোটিতেই টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা করতে পারল না বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল প্রথম ম্যাচে ৩৯ রান করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৬৫ রান করলেন। ২০১৮ সালের আগস্টের পর পেলেন টি-টোয়েন্টি ফিফটি। কিন্তু দুই দিনই তার স্ট্রাইকরেট ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

প্রথম ম্যাচে তামিমের স্ট্রাইকরেট ছিল ১১৪.৭০। দ্বিতীয় ম্যাচে সেটি ১২২.৬৪। ১৮তম ওভার পর্যন্ত তামিম উইকেটে থাকলেও ব্যাটিং করে গেছেন তিনি ওয়ানডে ধাঁচে।

অভিজ্ঞ তামিম প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। পারেননি তরুণ মোহাম্মদ নাঈম, আফিফ হোসেন ধ্রুবরা। বিপিএলে দারুণ সময় পার করলেও লিটন দাসও টানা দুই ম্যাচেই ব্যর্থ।

নাঈম প্রথম ম্যাচে ৪৩ রান করার পর এদিন তো শূন্য রানে আউট। প্রথম ম্যাচে তার ৪৩ রানের ইনিংসটিও ছিল তামিমের মতোই ধীরলয়ের। টি-টোয়েন্টিতে যা বেমানান। অথচ ভারতের বিপক্ষে নাগপুরে তার ৪৮ বলে ৮১ রানের ইনিংসটি সবাইকে কি আশাবাদীই না করেছিল।

বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের হয়ে বেশ কয়েকটি ঝোড়ো ইনিংস খেলেছিলেন মেহেদী হাসান। যা তাকে পাকিস্তান সফরের দলে সুযোগ করে দেয়। প্রথম ম্যাচে একাদশে না থাকলেও এদিন সুযোগ পেলেন। ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে সেই মেহেদীও ব্যর্থ। ১২ বলে ৯ রানের বেশি করতে পারলেন না। যদিও বাংলাদেশের ইনিংসের তিনটি ছক্কার একটি তার।

ওপেনারে ভরা স্কোয়াড। সৌম্য সরকার যে একাদশে থাকলেও টপ অর্ডারে সুযোগ পাবেন না সেটা আগেই জানানো হয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে। এই বাঁহাতি দুই ম্যাচে ব্যাটিং করলেন যথাক্রমে ছয় ও সাতে। প্রথম ম্যাচে মাত্র ৫ বল খেলতে পরে ৭ রান করেন। আর দ্বিতীয় ম্যাচে সমান বল খেলে অপরাজিত ৫ রান।

সব মিলে এক করুণ চিত্র বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে যা শঙ্কার মেঘ ঘনীভূত করছে বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশে। এই দীনতা থেকে কীভাবে বের হবে বাংলাদেশ?

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন