গ্রামের মাতব্বর বলে কথা!

  20-07-2018 06:41PM

পিএনএস ডেস্ক : নওগাঁর রাণীনগরে মৃত ব্যক্তির মিলাদ- মাহফিলে অংশগ্রহণ না করায় একটি পরিবারকে এক বছর ধরে মাতব্বররা সমাজচ্যুত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার একডালা ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামে কৃষক মুনছুর আলীর পরিবার এই অভিযোগ করেছে। যতই দিন যাচ্ছে ততই ওই পরিবারকে গ্রামের সবকিছু থেকে বিরত রাখার জন্য গ্রামের কতিপয় মাতব্বর প্রতিনিয়তই জারি করছেন নতুন নতুন নিয়ম-কানুন। এতে অসহায় হয়ে পড়েছেন ওই পরিবারের সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৭ সালের জুলাই মাসের প্রথম দিকে ওই গ্রামের মহির উদ্দিন মন্ডলের মৃত্যু উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে অংশ নিতে পারেনি ওই গ্রামের মুনছুর আলীর পরিবার। এই অপরাধে মৃত মহির উদ্দিন মন্ডলের ছেলে গ্রামের কথিত মাতব্বর আব্দুস সামাদ মন্ডল গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে সলিশ-বৈঠকের মাধ্যমে মুনছুর আলীর পরিবারকে একঘরে বা সমাজচ্যুত করে রাখার সিধান্ত নেন।

এরপর থেকেই তারা ওই পরিবারটিকে গ্রামের কোন কাজে বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেন না। এমনকি গত কোরবানীর ঈদে মিসকিনদের জন্য রাখা মাংস পর্যন্ত গ্রামের অন্যদের মাংসের সঙ্গে একত্রে বিলি করতে দেননি। সম্প্রতি মুনছুর আলীর শ্যালকের মেয়ের বিয়েতেও এই পরিবারকে দাওয়াত না দেওয়ার নির্দেশ দেন আব্দুস সামাদ মন্ডল।

মুনছুর আলীর ছেলে মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, কী অপরাধে আব্দুস সামাদ মন্ডলসহ গ্রামের অন্য মাতব্বররা আমাদের পরিবারকে একঘরে বা সমাজচ্যুত করে রেখেছেন তার সঠিক কারণ আমার জানা নেই। তবে মহির উদ্দিন মন্ডলের মিলাদে অংশগ্রহণ না করার পর থেকে আব্দুস সামাদ মন্ডলের নেতৃত্বে অন্য মাতব্বররা আমাদের পরিবারকে একঘরে করে দীর্ঘদিন যাবত অত্যাচার করছেন।

তিনি বলেন, আমরা ভেবেছিলাম সময় গেলে তারা হয়তো আমাদের পরিবারের প্রতি সদয় হবেন। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে আমাদের পরিবারের প্রতি মাতব্বরদের অত্যাচারের মাত্রা ততই বৃদ্ধিই পাচ্ছে। এতদিন আমরা গ্রামের অন্যান্য মানুষের সহযোগিতায় বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলেও আব্দুস সামাদ মন্ডল তা ভেস্তে দেন। তারা আমার মামাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে পর্যন্ত আমাদের পরিবারকে অংশগ্রহণ করতে দেননি। আমরা এই অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই।

ওই গ্রামের মাতবর আব্দুস সামাদ মন্ডল বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভূয়া। ওই পরিবার তাদের জমি চাষসহ সকল কাজই করছে। তাদের আবার আমরা একঘরে করলাম কোথায়!

রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া বিনতে তাবিব বলেন, এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন