শেরপুরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট আর লো ভোল্টেজে নাকাল হাজার হাজার গ্রাহক

  15-08-2018 07:35PM

পিএনএস, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে বিদ্যুতের লোডশেডিং না থাকলেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট আর লো ভোল্টেজে নাকাল হাজার হাজার গ্রাহক। লাইন ফল্ট, ট্রান্সফরমার বিকলসহ নানা অজুহাতে বিদ্যুতের যখন তখন আসা যাওয়া এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিবছর বিদ্যুতের পুরণো লাইন মেরামত ও সংস্কারের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু কলমের মারপ্যাচে এদিক-সেদিক করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাই ওপরে ফিটফাট মনে হলেও ভেতরে একদম সদরঘাট। একেবারে নড়বড়ে সিস্টেমে চলছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকোর) বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র। ফলে বৃষ্টির প্রয়োজন নেই। দমকা বাতাসও লাগেনা। আকাশে মেঘ ডাকলেই যেন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সংযোগ তার ছিড়ে মাটিতে পড়ে। ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে যায়। খুঁটি হেলে পড়ে। এছাড়া কারিগরি আরো অনেক সমস্যাতো রয়েই গেছে। এমন দূর্ভোগ নিত্যদিন শিকার হতে হয় নেসকোর গ্রাহকদের। গেল সোমবার ১৩ আগস্টের ঘটনা। মধ্যরাতে হালকা বাতাস আর ছিটেফোটা বৃষ্টির পানির তোড়ে বিদ্যুতের প্রধান সঞ্চালন লাইনের (৩৩কেভি) তার ছিড়ে মাটিতে পড়ে যায়। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে গোটা উপজেলা। টানা ১২ঘন্টা বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় থাকে। এরপর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসে।

এ উপজেলায় নেসকোর এমন বেহাল অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শরীফ আহমেদ, জাহাঙ্গীর ইসলাম, মুনসুর আলী বলেন, লোডশেডিং না থাকলেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট লেগেই আছে। ফলে যখন তখন বিদ্যুতের আসা-যাওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধান ও আঞ্চলিক সঞ্চালন লাইন ফল্ট, ট্রান্সফরমার বিকলসহ নানা অজুহাতে ঘন্টার পর ঘন্টা বন্ধ থাকছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এতে করে প্রতিনিয়তই তাদের নাকাল হতে হচ্ছে।

এদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পাশাপাশি লো ভোল্টেজ সমস্যায় রয়েছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ। উপজেলার সিংহভাগ গ্রামের মানুষ বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে পারছেন না। উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের সাধুবাড়ী গ্রামের আলহাজ্ব জাহিদুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী, হাবিবর রহমান পান্না, শহিদুল ইসলাম, মামুরশাহী গ্রামের সোহেল রানা, আনিছুর রহমানসহ একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, গেল কয়েকমাস ধরে লো ভোল্টেজের কারণে বাসা-বাড়ির বিদ্যুৎ চালিত মোটরে পানি উঠছে না। ফ্রিজ চলছে না। সেলিং ফ্যান আস্তে ঘুরছে। ফলে বাতাসও কমে গেছে। নিভু নিভুভাবে জ্বলছে বিদ্যুতের বাতি। এ অবস্থায় জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। বিষয়টি বিদ্যুত অফিসের কর্তা ব্যক্তিদের জানানো হলেও তারা কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।

সংশ্লি¬ষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় নেসকোর বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আওতায় প্রায় ৩৩হাজার গ্রাহক রয়েছে। এরমধ্যে মাঝারি আকারের শিল্প কলকারখানার সংযোগ রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক। দুই হাজারের মত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নেসকোর শেরপুর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোপাল চন্দ্র সাহা বলেন, সোমবার মধ্যরাতে আকর্ষিকভাবে ৩৩কেভি লাইনের তার ছিড়ে পড়ায় পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। প্রায় ১২ঘন্টা মেরামত কাজ শেষে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে। এর বাইরে আর কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি এই নির্বাহী প্রকৌশলী।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন