পাসপোর্ট কর্মকর্তার কান্ড, মামলা করায় স্ত্রীকে তালাক!

  25-09-2018 04:54PM

পিএনএস, বগুড়া প্রতিনিধি : একাধিক স্ত্রী-সংসার, সন্তান ও মেয়ে জামাই থাকতেও পাসপোর্ট কর্মকর্তার প্রতারণার বিয়ে, যৌতুক দাবি, গর্ভপাত এবং হত্যা চেষ্টার ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করায় স্ত্রী রীনা পারভীনকে তালাক দিয়েছে অভিযুক্ত পাসপোর্ট কর্মকর্তা খোরশেদ আলম।

মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদরের উপ-শহর কাঁচা বাজার এলাকার রীনা পারভীন। নির্যাতিতা এই গৃহবধূ জানান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক প্রতারক খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণার বিয়ে, যৌতুক দাবি, গর্ভপাত এবং হত্যা চেষ্টার ঘটনায় চলতি বছরের ২৩ মে জেলা বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং (১) আদালতে মামলা (নং ১২০ পি/২০১৮) দায়ের করেন রীনা পারভীন। মামলা দায়েরের ১০ দিন পর ২ জুন রীনা পারভীনকে তালাক করেন অভিযুক্ত পাসপোর্ট কর্মকর্তা। আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেয়ার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে অভিযুক্ত পাসপোর্ট কর্মকর্তা খোরশেদ আলমকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। মানবাধিকার কয়েকটি সংগঠন বলছে, আদালতে স্ত্রীর করা মামলা চলমান অবস্থায় তালাক দেয়ায় অভিযুক্ত পাসপোর্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ দিলেন। দোষ ঢাকতেই স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী-সন্তান ও পরিচয় গোপন করে রীনা পারভীনকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে বিয়ে করেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক প্রতারক খোরশেদ আলম। তিনি বগুড়া জেলা পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত থাকাকালে ২০১৬ সালের ২ জুন তারিখে বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল ঘাটেরপার (বালুপাড়া) তেলীহারা এলাকার কাজী শফিকুল ইসলাম শফিকের মাধ্যমে রীনা পারভীনকে কাবিননামা ও রেজিষ্ট্রি করে বিয়ে করে। এরপর রীনা পারভীন গর্ভবতী হলে প্রতারক স্বামী খোরশেদ তার গর্ভপাত ঘটায়। হঠাৎ করে বগুড়া জেলা থেকে মাগুরা জেলা পাসপোর্ট অফিসে বদলি হয়ে স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন খোরশেদ আলম। পরে স্বামীর খোজে মাগুরা পাসপোর্ট অফিসে গেলে স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন খোরশেদ আলম। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রীনা পারভীনকে মারধরও করেন ওই পাসপোর্ট কর্মকর্তা। এনিয়ে মাগুরা জেলা প্রশাসক ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন রীনা পারভীন। এতে খোরশেদ আলম ক্ষিপ্ত হয়ে রীনা পারভীনকে তালাক ও হত্যার হুমকি দেন। সেই বিষয়েও বগুড়া সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন নির্যাতিতা গৃহবধূ। সর্বশেষ বগুড়ায় স্ত্রী রীনা পারভীনের ভাড়া বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে স্ত্রীকে বেধরক মারপিট ও হত্যার চেষ্টা করে খোরশেদ। পরিবারের লোকজন রীনাকে উদ্ধার করে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করে। সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান খোরশেদ। এসব ঘটনায় পাসপোর্ট কর্মকর্তা খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন রীনা পারভীন। বিষয়টি নিয়ে বগুড়া প্রেসক্লাবে দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই গৃহবধূ। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন রীনা।

এপ্রসঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত পাসপোর্ট কর্মকর্তা খোরশেদ আলম ফোন রিসিভ করেননি।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন