তিতলির প্রভাবে শাহপরীর দ্বীপের শতাধিক বাড়ি-ঘর সাগরে বিলীন

  12-10-2018 07:48PM

পিএনএস, টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে অব্যাহত বৃষ্টি ও উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপে নতুন করে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন এবং চলাচলের রাস্তা ধসে গেছে। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসানসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন শাহপরীর দ্বীপের ভাঙনকবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। নতুন করে শাহপরীর দ্বীপ ভাঙনে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, দ্বীপের বেড়িবাঁধটি সম্পূর্ণ না হওয়ায় চলতি বর্ষা মৌসুমে শাহপরীর দ্বীপ এলাকা পানিবন্দী হয়ে থাকে। যার কারণে মাটিগুলো নরম ছিল।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ সোনা আলী জানান, প্রধানমন্ত্রী শাহপরীর দ্বীপ বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ১০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন গত বছর। বেড়িবাঁধের কাজ প্রায় এক কিলোমিটার শেষ হয়েছে। আরও দুই কিলোমিটার বাঁধ এখনও অরক্ষিত রয়ে গেছে। অরক্ষিত অংশ দিয়ে গেল দুই দিন ধরে ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপ মাঝেরপাড়া, জাইল্যাগোদা ও দক্ষিণপাড়ার শতাধিক ঘরবাড়ি পানিবন্দী হয়ে পড়ে। ঘরছাড়া মানুষগুলো কোনও জায়গা না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভিজে দিন পার করছে। বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারি কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমাকে অবহিত করেছি। তিনি দ্রুত সাহায্য পাঠানো হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।

তিনি আরও জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বেড়িবাঁধ নির্মাণের ঠিকাদার আন্তরিক হলে দ্বীপের দক্ষিণ অংশের ক্ষয়ক্ষতি অনেক রোধ করা সম্ভব হতো। বর্তমানে সেখানে ভালোভাবে জিও ব্যাগ দিলে এলাকাগুলো সাগরের জোয়ারের থাবা থেকে রক্ষা পাবে।

এদিকে উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপে নতুন করে ভয়াবহ ভাঙনের খবর পেয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল হাসান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমা গতকাল বৃহস্পপতিবার বিকেলে শাহপরীর দ্বীপ পরিদর্শনে যান।

এসময় তিনি বলেন, যাদের ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে তাদের বসতভিটার জমি যদি খতিয়ানভুক্ত হয়ে থাকে তাদের সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে বসতি করার সুযোগ দেয়া হবে। যাদের কাগজপত্র নেই তাদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে বিলীন হওয়া শাহপরীর দ্বীপ মাঝেরপাড়া এলাকার একটি মসজিদসহ প্রায় ১০টি বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান জানান, আগে থেকে পানিবন্দি থাকায় মাটিগুলো ভেজা ছিল।এরই প্রেক্ষিতে সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েকটি বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে। সেইসঙ্গে চার পরিবার, একটি মসজিদ ও মাদরাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এ মসজিদ-মাদরাসাটি আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন