নরসিংদী হানাদার মুক্ত দিবস আজ

  12-12-2018 07:35PM

পিএনএস,নরসিংদী প্রতিনিধি : আজ ১২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক নরসিংদী শত্রুমুক্ত মুক্ত দিবস।১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনীর ২১ সদস্যের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে শত্রু মুক্ত হয় নরসিংদী।

এ দিন বর্তমান পলাশ উপজেলার জিনারদী রেলস্টেশনের পূর্ব পাশে পাটুয়া গ্রামে সংঘটিত হয়েছিল নরসিংদীর শেষ যুদ্ধ। এ যুদ্ধের মধ্য দিয়েই নরসিংদীকে শত্রুমুক্ত হিসেবে ঘোষিত করা হয়েছিল। প্রায় এক ঘণ্টা যুদ্ধ চলার পর ২১ জন হানাদার অস্ত্র শস্ত্রসহ মুক্তি যোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ২১ হানাদারের মধ্যে দুজন মারাত্মক আহত হওয়ায় তাদেরকে হত্যা করা হয়। বাকি ১৯ জনকে স্বাধীনতার পর ১৭ জানুয়ারি মেজর হায়দারের মাধ্যমে রমনা থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য,মুক্তিযুদ্ধে নরসিংদী জেলা ছিল ২নং সেক্টরের অধীনে। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তৎকালীন মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ। পরে নরসিংদীকে ৩নং সেক্টরের অধীনে নেওয়া হলে কামান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন মোঃ নূরুজ্জামান। স্বাধীনতা যুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাস নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে খন্ড-যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এ সব খন্ড-যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে শহীদ হয়েছিল ১১৬ বীর সন্তান। তন্মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলায় ২৭,পলাশে ১১,শিবপুরে ১৩, মনোহরদীতে১ ২,বেলাবতে ১৬ ও রায়পুরায় উপজেলায় ৩৭জন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ভয়াবহ রাতের পর ৪ এপ্রিল পাকিস্তানীদের বিমান হামলায় নরসিংদী শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।

এ হামলায় শহীদ হন আব্দুল হক,নারায়ণ চন্দ্র সাহা,চাঁদ মোহন দাস,জগদীস দাস,নির্মল দাসসহ নাম না জানা আরও অনেকে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নরসিংদীর পাঁচদোনা ব্রিজে বিভিন্ন যানবাহন থেকে যাত্রীদের নামিয়ে পাকসেনা ও তাদের দোসর রাজাকাররা নিরীহ মানুষদের হত্যা করে ব্রিজের নিকট গণকবর দিয়েছে। এ স্থানটি বধ্যভূমি হিসেবে সরকার কর্তৃক চিহ্নিত করা হয়েছে এবং জেলার সবগুলো বধ্যভূমি সংরক্ষণ করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুল মোতালিব পাঠান বলেন,মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ১২ ডিসেম্বর নরসিংদীবাসীর কাছে অত্যন্ত গৌরবময় ও স্মরণীয় দিন। প্রতি বছর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করা হয়। এ জেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে সমুন্নত রাখতে স্বাধীনতার ৩৪ বছর পর ২০০৫ সালে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক নির্মিত হয়।এদিনে বিজয়ী বাংলাদেশের রক্ত সূর্য খচিত গাঢ় সবুজ পতাকা উঠেছিল জেলার সর্বত্র। ১২ ডিসেম্বর মুক্তির আনন্দে উচ্ছসিত মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার ঢল নামে শহরে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন