বকশীগঞ্জে ভরাট খাল পুনঃখননের দাবি এলাকাবাসীর

  12-01-2019 06:51PM

পিএনএস, বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি : জামালপুরের বকশীগঞ্জে কৃষকের ফসল রক্ষা ও জলাবদ্ধতা দূর করতে আড়াই কিলোমিটার খাল পুনঃখনন ও এবং দুই কিলোমিটার খাল নতুন করে খননের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও কয়েক হাজার কৃষক ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোড় ও ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়ন এবং শ্রীবরদী উপজেলা সিংগাবরুনা ও কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের শত শত হেক্টর জমি এক সময় পানির নিচে থাকত। ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নে অবস্থিত গারো পাহাড়ের পাহাড়ি ঢলের কারণে এই চারটি ইউনিয়নের অধিকাংশ জমিতে রোপা আমন চাষাবাদের বাইরে ছিল। শুধুমাত্র বোরো চাষ ছাড়া এই জমি গুলোতে কোন আবাদ হতো না।

বকশীগঞ্জ ও শ্রীবরদী উপজেলার কয়েক হাজার মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোড় ইউনিয়নের টিলাপাড়া গ্রাম ও পাশ্ববর্তী শ্রীবরদী উপজেলার সিংগাবরুনা ইউনিয়নের মুরগীচোরা গ্রামের মাঝ দিয়ে আড়াই কিলোমিটার পর্যন্ত একটি খাল খনন করা হয়।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) উদ্যোগে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ওই খালটি খনন করা হয়। খালটি খননের পর থেকে স্থানীয় দুই উপজেলার কৃষকরা সুবিধা পেতে শুরু করে। তারা ওই জমি গুলোতে বছরে তিন টি ফসল উৎপাদন করে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে ওই খাল থেকে প্রচুর মাছ পাচ্ছেন এলাকার মানুষ। দুই বছর পূর্ণ সুবিধা পেলেও এখন ফের অসুবিধায় পড়েছেন ওই এলাকার কৃষকরা। তারা আগের মত সুবিধা পেতে খালটি পুনঃখনন ও আরো অতিরিক্ত দুই কিলোমিটার পর্যন্ত খালটি সম্পসারণ করতে পারলে কৃষকরা আগের চেয়ে আরো বেশি সুবিধা ও ফসল উৎপাদন করতে পারবে।

বাট্টাজোড় ইউনিয়নের গ্রামের কৃষক ও মৎস্যচাষী মুছা তারেক বলেন, খালটি মুরগীচোড়া গ্রাম থেকে শুরু হয়ে নুহাই খালে গিয়ে শেষ হয়েছে। কিন্তু মুরগীচোড়া গ্রাম থেকে উত্তরে বাট্টাজোড় ইউনিয়নের কুড়ি বিল থেকে এক কিলোমিটার এবং দক্ষিণে নুহাই খাল থেকে এক কিলোমিটার তেনা চিরা খাল পর্যন্ত নতুন করে খাল খননের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় মুরগীচোরা গ্রামের কৃষক কাসু মিয়া জানান, এক সময় এই এলাকার জমি পানির নিচে পড়ে থাকত। সেখানে কোন আবাদ হতো না। খালটি খনননের পর আষাঢ় , শ্রাবণ, ভাদ্র মাসেও পানি চলে যায়। এতে করে আমরা রোপা আমন , আলুর চাষ সহ সব ধরণের সবজি চাষ করতে পারছি। তিনি নতুন করেন খালটি সম্প্রসারণের দাবি জানিয়েছেন।

বাট্টাজোড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হানিফ তালুকদার জানান, গারো পাহাড়ের পাহাড়ি ঢলের কারণে এই এলাকার কৃষকরা তাদের জমিতে চাষাবাদ করতে পারত না। খালটি খননের পর পানির নিচের জমি গুলো আবাদের আওতায় এসেছে । এতে করে খাদ্যে যেমন আমরা স্বয়ংসম্পূণ হচ্ছে তেমনি অর্থনৈতিক ভাবেও লাভবান হচ্ছে সাধারণ কৃষকরা। তবে তিনি পাহাড়ি ঢলের স্রোতের কারণে খালের দুই পাড় ভেঙে যাওয়ায় এবং খালের তলদেশ দিন দিন ভরাট হয়ে যাওয়ায় পুনঃখননের দাবি জানান।

শুধু হানিফ তালুকদারই নয় ওই এলাকায় কয়েক শত কৃষক খালটি পুনঃ খনন, দুই পাড় পুনঃনির্মাণ, অতিরিক্ত আরো দুই কিলোমিটার খাল খনন করার দাবি জানিয়েছেন এলাকারকয়েক হাজার মানুষ।

তারা খাল পুনঃখননের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেকমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ এবং কৃষি বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর আজাদ জানান, এ বিষয়টি আমাকে কেউ কোন কিছু জানায়নি।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন