নুসরাতের মাদরাসায় সিসি ক্যামেরা

  21-07-2019 02:59AM



পিএনএস ডেস্ক: আলোচিত ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা অবশেষে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে মাদরাসা ক্যাম্পাসে ১০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।

বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনব্যাপী কাজ করে মাদরাসাটি পুরোপুরি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়। এই সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ মাদরাসা ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরনের অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অধ্যক্ষের যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় ওই মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোচিত ও সমালোচিত হয়ে ওঠে মাদরাসাটি। এর আগে ২০১৮ সালে গভর্নিং বডির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মাদরাসায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত হলেও মাদরাসা তহবিলে আর্থিক সংকটের অজুহাত তুলে সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাহ একক সিদ্ধান্ত নিয়ে সিসি ক্যামেরা লাগাননি। তবে এ সিদ্ধান্তকে ভিন্নভাবে দেখছেন মাদরাসা গভর্নিং বডির সাবেক শিক্ষাণুরাগী সদস্য, পৌর কাউন্সিলর শেখ মামুন।

তিনি দাবি করেন, ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি গভর্নিং বডির সভায় তার প্রস্তাবনার আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে মাদরাসা ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাহ তার যৌনাচার চালানোর জন্য গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সিসি ক্যামেরা লাগাননি। যদি সিসি ক্যামেরা লাগাতো নুসরাতের মতো মেধাবী ছাত্রীকে নৃশংসভাবে অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে মরতে হতো না। দেরীতে হলেও মাদরাসাটি সিসি ক্যামেরার আওতায় আসায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান শেখ মামুন।

মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইন জানান, গভর্নিং বডির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মাদরাসাটি পুরোপুরি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। আশা করি এবার কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে প্রমাণ হিসেবে সিসি টিভিতে রেকর্ড থাকবে। আর কেউ অপরাধ করেও পার পাবে না।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে অফিস কক্ষে ডেকে যৌন হয়রানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাহ। ওইদিন তার মা বাদী হয়ে অধ্যক্ষকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলা তুলে নিতে নুসরাত ও তার পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে অধ্যক্ষের অনুসারীরা ।

মামলা তুলে না নেয়ায় গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়। গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাহেতর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে গত ৮ এপ্রিল ৮ জনের নামে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ১০ এপ্রিল মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়। পিবিআই ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট প্রদান করেন। আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন