৭ বছর পর মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত খাদিজা

  18-08-2019 03:36AM

পিএনএস ডেস্ক:খুব সম্ভবত পৃথিবীতে একটি সম্পর্ক কখনও পুরানো হয় না। আর তা হলো, সন্তানের সাথে মা-বাবার সম্পর্ক।ভাবতেও পারিনি, বাবা-মাকে ফিরে পাবো! দীর্ঘ সাত বছর পর মায়ের মায়াভরা মুখ দেখলাম। মনে হচ্ছে, আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি। পরিবারকে ফিরে পেয়ে এতো খুশি হয়েছি, যা কাউকেই বোঝাতে পারবো না।

শনিবার (১৭ আগস্ট) মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে কথাগুলো একদমে বলে গেলেন খাদিজা খাতুন (১৯)।

যিনি ২০১২ সালে প্রতিবেশী এক ভাইয়ের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়েছিলেন। এরপর দীর্ঘ ছয় বছর ভারতের মালদহে সরকারি এক সেফহোমে থাকতে হয়েছে তাকে। গত বছরের ১৯ এপ্রিল কোনও এক মাধ্যমে চাঁপাইনাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি এবং আশ্রয় নেন রাজশাহীর মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) শেল্টার হোমে। সেই থেকে খাদিজা দীর্ঘ একবছর ৪ মাস এসিডির শেল্টার হোমেই ছিলেন।

খাদিজার বাবার নাম আবুল কাশেম ফকির আর মা আনোয়ারা বেগম। এসিডির অফিসে এসে মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের বাড়ি ময়মনসিংহে। তবে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার গুলশান-২ এর নূরের চালা এলাকায় পরিবার নিয়ে বাস করি আমরা। ২০১২ সালে খাদিজা যখন নিখোঁজ হয়, তখন সে মাদ্রাসায় পড়তো। পড়ালেখার পাশাপাশি পাশের বাসার ধনাঢ্য এক ব্যক্তির সন্তানকে দেখাশোনার কাজ করতো সে। একদিন ওই বাড়িতে গিয়ে সেখান থেকেই নিখোঁজ হয় খাদিজা। পরে জানতে পারি, প্রতিবেশি এক লোকের মাধ্যমে খাদিজা ভারতে পাচার হয়ে গেছে। এরপর থেকে আমার মেয়েকে পাওয়ার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম।

আনোয়ারা বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে এসিডির মাধ্যমে হঠাৎ মেয়ের খোঁজ পাই। তখনই মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা কই। বুঝতে পারি, এই সেই আমার খাদিজা। অবশেষে গুলশান থেকে মেয়েকে নিতে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হই। শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে এসিডি অফিসে মেয়েকে পেয়ে খুব ভালো লেগেছে। মেয়েকে পেয়ে মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি।

এসিডির শেল্টার হোম ম্যানেজার পুষ্প রাণী বিশ্বাস বলেন, ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার মাধ্যমে আমাদের শেল্টারহোমে আসে খাদিজা। তারপর থেকে সে শেল্টার হোমেই ছিল। এখানে আসার পর থেকেই খাদিজা পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চেয়েছিল। আমরা তার পরিবারের খোঁজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলাম। শেষপর্যন্ত আমরা পরিবারের খোঁজ পেয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার দুপুরে খাদিজাকে মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করেছি।

এ সময় খাদিজা বলেন, আমি এসিডি’র প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। পরিবারকে ফিরিয়ে দেয়ার ঋণ আমি কোনোদিন শোধ করতে পারবো না।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন