সরাইলে চাল আত্মসাৎ মামলায় শ্রমিকের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ

  15-09-2019 09:45PM

পিএনএস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলাসরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউপি’র ভিজিডি কর্মসূচির দুস্থ উপকারভোগীদের চাল আত্মসাৎ মামলায় আসামি করা পাঁচ দুস্থ শ্রমিক শাকিল, রাজন, সাইফুর রহমান, মাসুদ ও তৌহিদ মিয়াকে পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।

আজ রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সরাইল থানার এসআই ও এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মনজুর আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ মামলায় আটকের পর জেলহাজতে থাকা পাঁচজনের প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ মামলাটি পুলিশ বিশেষ গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। তদন্ত কাজ চালানো হচ্ছে বিশেষ কৌশল অবলম্বনে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি কর্মসূচির দুস্থদের রিলিফের চাল বস্তা বদল করে পাচারের সময়ে ইউপির দেওড়া গ্রামের আজাহার মিয়ার বাড়ি থেকে পুলিশ হাতেনাতে ১১৯ বস্তা চাল জব্দ করে। উদ্ধার করা হয় সরকারি এসব চালের দেড়শতাধিক খালি বস্তা। আটক করা হয় এ কাজে নিয়োজিত পাঁচ শ্রমিককে। তাদের বাড়ি ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামে। আটককৃত শ্রমিকেরা পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেন, তারা এসব চালের বস্তা সরাসরি শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের গুদাম থেকে এনে এখানে বস্তা বদল করছিলেন স্থানীয় শাহজাহান মিয়া নামে এক ব্যক্তির নির্দেশে। এ ঘটনায় ১২ সেপ্টেম্বর সরাইল থানার এএসআই গোপী মোহন সরকার বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে আরো ৩/৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।

এদিকে এই সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় এ বিষয়ে অভিযোগের তীর শাহজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকনের দিকে। যদিও ইউপি চেয়ারম্যান দাবি করেছেন, তিনি দুস্থদের মাঝে সঠিকভাবে ভিজিডি’র চাল বিতরণ করেছেন। দুস্থরা সেই চাল পথিমধ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে গেছেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের এই দাবি মানতে নারাজ দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেলে এ সরকারি চাল আত্মসাৎ মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন যেকোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন, এমন মন্তব্য করে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকারি এসব চালের বস্তা পাওয়া গেছে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকনের মামার বাড়ি থেকে। মামলার এজাহার নামীয় আসামি শাহজাহান মিয়া হলেন শাহজাদাপুর ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের ছেলে। তারা বাপ-ছেলে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছের মানুষ। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, সরকারি এই চাল আটক হওয়ার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান নানা দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। ভিজিডির দুস্থ কার্ডধারীদের ডেকে এনে বিভিন্ন কাগুজে টিপসহি নিচ্ছেন এমন তথ্যও পুলিশের কাছে রয়েছে। এই সরকারি চাল আটকের ঘটনায় ওপর মহল থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া আছে। পুলিশের তদন্তে চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন