ফরম পূরণ করা হলো না ফারজানার

  13-11-2019 05:22AM

পিএনএস ডেস্ক : বাড়ি ফিরে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করার কথা ছিল ফারজানা আক্তারের। কিন্তু পথেই হলো সব শেষ। বাড়িতে ফিরেছে তার লাশ। ফরম পূরণ আর করা হলো না ফারজানার।

সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগে ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ফারজানাও একজন।

খালাতো বোনের বিয়ের দাওয়াতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সে গিয়েছিল সিলেটের শ্রীমঙ্গলে। বাড়ির ফেরার পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের শেষ দিন হওয়ায় অনেকটা তড়িঘড়ি করেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শ্রীমঙ্গল থেকে উদয়ন এক্সপ্রেসে চাঁদপুরে ফিরছিলেন ফারজানা।

ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশন অতিক্রম করার সময় তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হয় তার মাসহ পরিবারের আরো সাত সদস্য।

এ ঘটনায় ফারজানার স্বজন, এলাকাবাসী ও সহপাঠীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

ফারজানা চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউপির কাতার প্রবাসী বিল্লাল হোসেন বেপারীর মেয়ে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে ফারজানা ছিল সবার বড়। বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা ছিল।

গত ৬ নভেম্বর খালতো বোন ঝুমার বিয়েতে মা বেবী বেগম, নানি ফিরোজা বেগম, ভাই হাসান বেপারী, মামি সাহিদা বেগম, মামাতো বোন মিতু আক্তার, মিতুর শিশুসন্তান ধ্রুব, মামাতো বোন ইবলিসহ আটজন সিলেটের শ্রীমঙ্গলে যায়।

বিয়ে শেষে পাঁচ দিন পর ফারজানার ফরম পূরণের জন্য চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। লাকসাম হয়ে তাদের চাঁদপুরে আসার কথা ছিল। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশনে তূর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের সংঘর্ষে সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যায়।

ট্রেনের চাপায় ফারজানার হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার বড় ভাই হাসান বেপারির দুটি পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফারজানার আহত স্বজনদের উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা বারডেম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে দুপুরে ফারজানার লাশ তার গ্রামের বাড়ি বালিয়ায় আসলে শত শত গ্রামবাসী ও স্কুলের সহপাঠীরা তাকে একনজর দেখতে তার বাড়িতে ভিড় করে।

ফারজানার সহপাঠীরা জানায়, মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের শেষ দিন ছিল। ফরম পূরণের জন্য সে উদ্‌গ্রীব ছিল। বিদ্যালয়ের নির্বাচনী পরীক্ষায় ফারজানা সব বিষয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছিল।

বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ফারজানার লাশ তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সে মেধাবী ছাত্রী ছিল।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন