পেঁয়াজের দর এক দিনে মণপ্রতি কমেছে ২ হাজার টাকা

পিএনএস ডেস্ক : ফরিদপুরে এক দিনে পেঁয়াজের দর নেমেছে মণ প্রতি দুই হাজার টাকা। জেলার দুই উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে এমন তথ্য। লাগামহীন পেঁয়াজের দাম কমে আসায় ক্রেতাদের মধ্যে ফিরে আসতে শুরু করেছে স্বস্তি।

শনিবার বোয়ালমারী উপজেলার চিতার বাজার, ময়েনদিয়া বাজার, জয় পাশা পেঁয়াজ বাজারে ব্যবসায়ীরা জানান, বাজার শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চাষিরা তাদের আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ নিয়ে বাজারে হাজির হয়। এ সময় ক্রেতারা ওই পেঁয়াজের দিকে ঝুঁকে যায়।

নাছিম আহমেদ কবির পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জানান, চিতার বাজারের আমি দুই মণ পেঁয়াজ নিয়ে যাই। কিন্তু দেখি হঠাৎ করে দর পড়ে গেছে। পরে বাধ্য হয়ে ৭ হাজার টাকা মণে সেই পেঁয়াজ বিক্রি করতে হয়।

এই এলাকার পেঁয়াজের বড় চাষি শামিম মোল্লা বলেন, ‘মৌসুমের সময়ে হাজার মণ পেঁয়াজ সংগ্রহ করেছিলাম, প্রথমদিকে বেশি অংশ কম দামে বিক্রি করেছি, সম্প্রতি সময়ে দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় বাড়িতে থাকা বাকি পেঁয়াজ বিক্রি করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, হঠাৎ করে শনিবার (১৬ নভেম্বর) থেকে এই বাজারে পেঁয়াজের দর মণ প্রতি দুই হাজার টাকা কমে গেছে।

চিতার বাজারের বণিক সমিতির সভাপতি মওলা বিশ্বাস জানান, আকর্ষিকভাবে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়ে ছিল।

তবে গত দুই দিন ধরে সেই দর নেমে আশায় পেঁয়াজ বাজার স্থিতিশীল হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে জেলা সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া, বালিয়াগট্টি বাজারের পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুরোনো পেঁয়াজ সর্বোচ্চ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে সাত হাজার টাকায়। অন্যদিকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজার মূল্য রয়েছে সাড়ে ৪ হাজার টাকার মধ্যে।

জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এই জেলার নয় উপজেলাতে পেঁয়াজ মৌসুমের সময়ে ৪ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের উৎপাদন হয়। চলতি শীত মৌসুমের আগাম জাতের মুড়ি কাটা পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার মেট্রিকটন।

এছাড়া জেলাতে তিন জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়- এর মধ্যে রয়েছে, হালি পেঁয়াজ (চারা থেকে উৎপাদন হয়), দানা পেঁয়াজ ( বীজ থেকে উৎপাদন হয়) এবং মুড়িকাটা পেঁয়াজ (গুটি থেকে উৎপাদন হয়)।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, চলতি শীত মৌসুমে ফরিদপুরে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে।

তিনি বলেন, যে সকল চাষি আগড় ( আগে) পেঁয়াজ রোপণ করে ছিলো তারা এখন তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারে অনতে শুরু করেছে। এতে পেঁয়াজ বাজার কিছুটা হলে নিম্নমুখীর দিকে।

এই কৃষি কর্মকর্তা আশার রেখে বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে অনেক চাষি তাদের আগাম জাতের পেঁয়াজ বাজারে তুলতে পারবে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, জেলায় যে সকল মাঠে পেঁয়াজের আবাদ বেশি হয় সে মাঠে শনিবার বিকেলে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, চাষিরা বলেছে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই ঘরে তুলতে পারবে তাদের পেঁয়াজ। আর এতে করে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন এই জেলা প্রশাসক।

ফরিদপুর শহরের হাজী শরীয়াতুল্লাহ বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম মোল্লা জানান, শনিবার থেকে এ বাজারে পুরাতন পেঁয়াজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে এবং নতুন হালি পেঁয়াজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে।

পিএনএস/জে এ