আজও শূন্যরেখায় ৭০ মুক্তিযোদ্ধার কবর

  14-12-2019 06:08PM

পিএনএস ডেস্ক : দেশ স্বাধীন করতে অস্ত্র হাতে পাকিস্তান বাহিনীকে মোকাবিলা করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের আত্মত্যাগের ফলে দেশ স্বাধীন হলেও ৭০ মুক্তিযোদ্ধার কপালে জোটেনি স্বাধীন দেশের মাটি। বাংলাদেশ ও ভারতের শূন্যরেখাতেই হয় তাদের সমাধি।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, একাত্তরে ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে ও যুদ্ধে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকে সেখানকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে সেসব মুক্তিযোদ্ধাদের অনেককে ত্রিপুরার আগরতলার দক্ষিণ রামনগর এলাকার শূন্যরেখায় কবর দেওয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী আখাউড়ার সেনারবাদীর কাছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার দক্ষিণ রামনগর। আখাউড়ার সেনারবাদী সীমান্ত থেকে আগরতলার রামনগরের শূন্যরেখায় ওই কবরগুলো দেখা যায়। তবে দেখে এগুলোকে কবর বলে মনে হয় না। গাছগাছালি আর লতাপাতা কবরগুলোকে ঘিরে রেখেছে। কবরস্থানের পূর্বে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া। এরপর খাল। পশ্চিমে খাল ও তারপর বাংলাদেশের সীমানা। দক্ষিণে জঙ্গল এবং উত্তরে খাল। কবরের তিন দিকের খালে কচুরিপানা।

দেখলেই বোঝা যায়, বহুদিন এসব কবরে কারো হাত পড়েনি। অবহেলা আর অযত্নে পড়ে আছে আমাদের দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরগুলো। দেশ স্বাধীনের ৪৮ বছরেও তাদের কেউ খবর রাখেনি।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, কবরগুলো ভারত-বাংলাদেশের শূন্যরেখার ভারতের অংশে হওয়ায় পরিচর্যা করা যাচ্ছে না।

আখাউড়া উপজেলার বাউতলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমার বাড়ির পাশেই ওপারে প্রায় ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে। এত কাছে থেকেও সহকর্মীদের কবরগুলোর জন্য কোনো কিছু করতে পারছি না।

তিনি আরো বলন, একাত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার দক্ষিণ রামনগরে একটি ইটভাটা ছিল। ওই ইটভাটায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে একটি যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে যেসব মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে আহত হন তাদের আগরতলা জিবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অনেকে মারা যান। তাদের ওই স্থানে কবর দেওয়া হয়।

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব মুক্তিযোদ্ধা হানাদার বাহিনীর গুলি খেয়ে ও গ্রেডের আঘাতে মারা গেছেন তাদের পাকিস্তানিদের ভয়ে আগরতলা নিয়ে জানাজা শেষে ওই স্থানে কবর দেওয়া হয়।

তিনি কবরগুলো পরিচর্যা করে সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান।

এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার রেইনা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি’।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন