ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় হত্যার হুমকির অভিযোগ

  31-03-2020 06:55AM

পিএনএস ডেস্ক: হিন্দু থে‌কে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় হত্যার হুমকি পাচ্ছেন এমন অভিযোগ করেছেন দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের নওমুসলিম মুসফিকা বেগম (১৯)।

ওই নারীর অভিযোগ ক‌রে বলেন, আমি একজন নওমুসলিম। হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। আমার পূর্বের পরিচয়: নাম- অনিতা রানী (১৯), পিতা- সোনাই চন্দ্র সিংহ, গ্রাম- বহরমপুর (হিন্দুপাড়া), হরিপুর, ঠাকুরগাঁও। জন্মসনদ, মার্কশীট ও সার্টিফিকেট অনুযায়ী আমার জন্ম তারিখ ১৫/০৪/২০০১ইং (বয়স ১৮ বছর ১০ মাস)। আমার বর্তমান পরিচয়: নাম মুসফিকা বেগম (১৯), স্বামী- জিয়াউর রহমান, গ্রাম- খামার, হরিপুর, ঠাকুরগাঁও।

তি‌নি ব‌লেন, ছোটবেলা থেকেই আমি সৃষ্টিকর্তার ভয়ে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট ছিলাম। একমাত্র শান্তির ধর্ম ইসলাম। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য আমি স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিস্কে, বিনা অনুরোধে ও বিনা প্ররোচণায় গত ০২/০২/২০২০ইং তারিখে জেলা নোটারী পাবলিক সাহেবের সম্মুখে দুইশত টাকা নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প যাহার নম্বর কষ-৭৩৪৭৯৭০ এবং কষ- ৭৩৪৭৯৭১ এর মধ্যে হলফ করে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি ও এফিডেভিট করেছি।

গত ১৬/০২/২০২০ইং তারিখে আমার বাবার বাড়ী হতে কাগজপত্র নিয়ে মামার বাড়ীতে গিয়েছিলাম। গত ১৭/০২/২০২০ইং তারিখে স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে এবং নিজ দায়িত্বে ইসলামী মাহফিলে গিয়ে শান্তির ধর্ম ইসলামের কালিমা পাঠ করে মুসলিম হয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ।

তি‌নি আরও ব‌লেন , ঐ মাহফিলে আমাকে অনেক মুসলিম যুবক বিয়ে করতে চেয়েছিল আর আমারও মুসলিম পরিবারে আশ্রয়ের প্রয়োজন ছিল। তাই ১৭/০২/২০২০ইং তারিখে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে মুসলিম ছেলে মো. জিয়াউর রহমানকে বিবাহ করেছি এবং আমরা সংসার করছি।

তি‌নি অভিযোগ ক‌রে ব‌লেন, ধর্ম ত্যাগ করার জন্য আমাকে নির্যাতন ও প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে পূর্বের ধর্মের কতিপয় লোকজন ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য, উগ্রবাদী হিন্দু সংস্থার সহযোগিতায় গত ১৮/০২/২০২০ইং তারিখে হরিপুর থানায় আমার নিরপরাধ স্বামী ও তার আত্মীয়-স্বজনের পাঁচজন ও অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনকে আসামি করে আমাকে নাবালিকা ও অপহরণ দেখিয়ে একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছে মামলা নং ১৪, জি,আর নং ৩৭/২০। আবার একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ঠাকুরগাঁওয়ে ২০/০২/২০২০ইং তারিখে আমার নিরপরাধ স্বামী সহ ১৪ জন ও অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জনকে আসামি করে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা নং ১২২৭৮/২০২০ (হরিপুর থানা মামলা নং-০৪) দায়ের করেছে।

ওই নওমুসলিম নারী আরো অভিযোগ করে বলেন, আমার নিরপরাধ স্বামী ও তার আত্মীয়স্বজন পুলিশি হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য নিজ পরিবার পরিজন ছেড়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছে। আমাকে ও আমার স্বামীর পরিবারের লোকজনকে হত্যা সহ বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং আত্মীয়-স্বজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি, প্রাণে মেরে ফেলা, গুম করা ও ক্ষতি করার ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা ঠাকুরগাঁও গেলে হামলা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। উপর মহলের চাপে পুলিশ চাকুরী বাঁচানোর জন্য মামলায় আসামির নাম না থাকা সত্বেও নিরপরাধ একজন ছেলে মোঃ জাহিদুল ইসলামকে ১৪ নং মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে নিয়েছে। অথচ আমি কারো বিনা প্ররোচণায়, সুস্থ মস্তিস্কে, স্বজ্ঞানে শান্তির ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করেছি এবং পিত্রালয় ত্যাগ করেছি। আমাকে অপহরণ করা হয়নি। আমি আমার স্বামীর সাথে ভাল আছি, আলহামদুলিল্লাহ।

তি‌নি ব‌লেন, আমি একজন প্রাপ্ত বয়স্কা ও সাবালিকা। আমি বাংলাদেশের আইন মেনে ধর্ম ত্যাগ করেছি এবং সেই অধিকার আমার আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সোনার বাংলায়, মুসলিম রাষ্ট্রে এমন নির্যাতন সহনীয় নয়।

নওমুসলিম নারি বলেন, গত ১৬/০৩/২০২০ইং তারিখে ধীরগঞ্জ, হরিপুর, ঠাকুরগাঁওয়ে উদ্রবাদী হিন্দুদের প্রভাব ও উস্কানিতে ধর্ষক প্রভাত রায় ও তার সহযোগিরা পরিকল্পিতভাবে স্কুল ছাত্রী মুসলিম মেয়ে মোছাঃ বিউটি আক্তারকে নির্মমভাবে ধর্ষণ করেছে। সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমি একজন মুসলিম মেয়ে ও বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ধর্ষক ও তার সহযোগিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

নওমুসলিম মুসফিকা বেগম বলেন, আমি এবিষয়ে আমার স্বামীও তার পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে মতিঝিল থানায় ১৮-০৩-২০২০ তারিখে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। যার নং ১৬২২।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, মানবাধিকার সংস্থা, ধর্ম প্রাণ সকল মুসলিম ভাই ও বোনের প্রতি অনুরোধ- আমার নিরপরাধ স্বামী ও তার আত্মীয়-স্বজন যেন সকল প্রকার হয়রানিমূলক মামলা থেকে রক্ষা পায় এবং আমার পূর্বের ধর্মের লোকজন ও শত্রুদের নিকট থেকে আমি যেন নিরাপত্তায় আমার স্বামীর বাসস্থানে বসবাস করতে পারি সেই সুযোগ দানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সহযোগিতা কামনা করছি।

পিএনএস/হাফিজ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন