শেরপুরে ওসির সাঁড়াশি অভিযান, গ্রেফতার ১০

  06-07-2020 06:54PM

পিএনএস, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, জুয়া-মাদক কারবারিসহ সবধরণের অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযানে নেমেছেন বগুড়ার শেরপুর থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান। গত ৩০জুন এই থানায় যোগদান করেই ওইসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। পাশাপাশি সে লক্ষ্যে বিরামহীন কাজও শুরু করেছেন তিনি। ফলে মাত্র সাতদিনের ব্যবধানেই পাল্টে যায় চিত্র। বন্ধ হয়ে গেছে ছোট-বড় সব জুয়ার আসর। এমনকি মাদক নির্মূলে নতুন ওসির কঠোরতা চোখে পড়ার মতো। তাই মাদক কারবারিদের কাছে এখন আতঙ্ক ওসি মিজানুর রহমান। কারণ যোগদানের শুরু থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া চুরি-ছিনতাই বন্ধে পুলিশের টহলও জোরদার করা হয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজদের ধরতে চালাচ্ছেন অভিযান। ফলে কমেছে সব ধরণের অপরাধমূলক কাজ।

মাদক, সন্ত্রান, চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারীদের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ওসি মিজানুর রহমান জানান, এই থানা এলাকায় অপরাধীদের কোন ঠাঁই নেই। তাদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার (০৫জুলাই) রাতে উপজেলার মির্জাপুর বাজারস্থ একটি সংগঠনের কার্যালয়ে চলা জুয়ার আসরে হানা দেয় পুলিশ। এসময় মির্জাপুর ইউনিয়নের পরিষদের দুই ইউপি সদস্যসহ (মেম্বার) দশ জুয়াড়িকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- মির্জাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম (৪৫), একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. কানু মিয়া (৪৮), মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবু বকর সিদ্দিক (৪৫), জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫), মো. তানভীর আহম্মদ (৩২), ফেরদৌস আলম (৪৩), আনোয়ার হোসেন (৩২), ফেরদৌস আলম (৪০), আমির হোসেন (৩৫) ও আহসান হাবিব (৪০)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত ওই অভিযানকালে গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে জুয়া খেলার সরঞ্জাম তাস ও নগদ আট হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জুয়া আইনে মামলা দিয়ে গতকাল সোমবার (০৬জুন) আদালতে পাঠানো হয়। এছাড়া এই অভিযানের আগের দিন শনিবার (০৪জুলাই) মাদক ব্যবসা ও চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িত সাত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের হেফাজতে থাকা চোরাই একটি কম্পিউটার, একটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টার ও একটি স্ক্যানিং মেশিন উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধ কর্মকা-ে জড়িতদের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে। জেলার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) মো. গাজীউর রহমানের দিক-নির্দেশনায় কাজ করছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। এদিকে ওসি মিজানের কঠোরতায় মাদকসহ সবধরণের অপরাধ দমনে ইতিমধ্যে তিনি সফল হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি আলহাজ¦ মুনসী সাইফুল বারী ডাবলু বলেন, তিনি একজন দক্ষ ও চৌকস পুলিশ অফিসার। তাই এই থানায় যোগদান করেই অপরাধ দমনে নানামুখি কর্মতৎরতা চালাচ্ছেন। ফলে অপরাধীদের কাছে এক আতঙ্কের নাম ওসি মিজানুর রহমান। এছাড়া অপরাধ প্রবণতা কমে যাওয়ায় এই উপজেলার সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরেছে বলেও দাবি করেন নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির এই নেতা।

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা শেরপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী বলেন, নবাগত ওসি মিজান মাদকসহ সব অপরাধীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা দিয়েছেন। সেলক্ষ্যে অপরাধীদের ধরতে অভিযানও চালাচ্ছেন। একইসঙ্গে অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষমও হচ্ছেন। তাই মাদক সেবীর চেহারা চোখে পড়ছে না। ইতিমধ্যে অনেকে মাদক ছেড়ে দিয়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী বলেন, ভাইরে নতুন ওসি খুবই কঠোর। তাই মাদক বিক্রি বন্ধ। এছাড়া মাদক সেবনের কোন জায়গাও পাই না। যেখানেই খেতে বসি পুলিশ ছো-দিয়ে ধরে যায়। এ কারণে ওইসব বাদ দিয়েছি। এখন ভালো হয়ে গেছি। স্বচ্ছ পথে আয়-রোজগার করে সংসার চালাচ্ছি। এতে করে স্ত্রী-সন্ত্রানসহ পরিবারের সবাই খুশি বলে জানান তারা।

পিএনএস/এসআইআর

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন