ফরিদপুরের সেই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার চান ছাত্রীরা

  02-09-2024 09:35PM

পিএনএস ডেস্ক: ফরিদপুরের আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদীন টিটনকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা।

সোমবার বেলা ১২টার দিকে শহরের মুজিব সড়কে বিক্ষোভ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা এ সময় আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদিনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় বিক্ষোভকারীরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখে- বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তানহা, হাজেরা তুলি, আয়েশা প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলে- প্রধান শিক্ষক একজন দুশ্চরিত্র প্রকৃতির ব্যক্তি। তিনি সব সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। তিনি সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো আমাদের বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছেন। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে জয়নুল আবেদীন যাতে প্রবেশ করতে না পারে এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি এবং প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীরা দাবি জানায়।

এর আগে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির মামলায় গত ১৪ জুলাই প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদিন টিটনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠালে গত ১৬ জুলাই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ মাহাতাব আলী মেথুর সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে থানায় মামলা হওয়া প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর ২৪ জুলাই ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জর্জ মো. আলী আকবরের আদালতে শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

পরবর্তীতে ২৯ জুলাই শুনানি শেষে পুনরায় তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এরপর গত ১৩ আগস্ট মামলার শুনানি শেষে প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদীনকে জামিন দেন আদালত।

শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে ২০১০ সালে যোগদানের পর থেকে ১৪ বছর যাবত ওই স্কুলের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি নিপীড়নসহ ছাত্রীদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদিন টিটন। প্রধান শিক্ষক হবার পর থেকে গত একযুগের বেশি সময় ধরে বিশেষ করে দশম শ্রেণির ছাত্রীরা টিটনের এমন লালসার শিকার হয়ে আসছিল। শ্রেণিকক্ষেই ছাত্রীদের গায়ে হাত দিতেন তিনি। নিজ বাসায় প্রাইভেট কোচিং করানোর সময় শিক্ষার্থীদের একাকী পেলে ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া, ফেসবুক মেসেঞ্জারে উত্তেজনাপূর্ণ আলাপচারিতাসহ পর্নোছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে ছাত্রীদের বশে আনতেন তিনি।

ফাঁদে পড়ে তার সঙ্গে অনেক ছাত্রী ঘনিষ্ঠ হতে বাধ্য হয়েছে। যারা তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতো তাদের টেস্ট পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের উত্তর দিয়ে পাশ করিয়ে দিতেন এবং যারা তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হতো তাদের ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখানো হতো।

এসব বিষয় নিয়ে গত ১২ জুলাই জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক ১২ শিক্ষার্থী।

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন