পিএনএস ডেস্ক: কেউ অসুস্থ হলে আল্লাহ তাআলা তাকে সুস্থ করে তোলেন। তবে এর জন্য মানুষের চেষ্টা করতে হয়। আল্লাহ তাআলার শেফা দান ও মানুষের চেষ্টায় একজন মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠে।
কেউ অসুস্থ হলে সর্বপ্রথম আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া চাইতে হয় তারপর চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা নিতে হয়। তবেই একজন মানুষ অসুস্থতার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন করতে পারে। অসুস্থতার কারণে ধৈর্য ধরলে এর সওয়াবও পাওয়া যায়।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
যে কোনো মুসলিম দুঃখ কষ্টে পতিত হয়, তা একটা কাঁটা কিংবা আরো ক্ষুদ্র কিছু হোক না কেন, এর মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলোকে মুছে দেন, যেমন গাছ থেকে পাতাগুলো ঝরে পড়ে। (বুখারি ৫৬৪৮)
রোগ মুক্তির জন্য কোরআনের আয়াত দিয়েও দোয়া করতে পারি। পবিত্র কোরআনে ৬টি আয়াত আয়াতে শেফা বা রোগ মুক্তির আয়াত নামে পরিচিত। এগুলো পড়ার পূর্বে সুরা ফাতিহা পড়ে নেয়া উত্তম।
আয়াতগুলো হচ্ছে
১. সুরা তাওবার ১৪ নং আয়াত,
وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ উচ্চারণ- ওয়া ইয়াশফি ছুদু-রা ক্বাওমিম মু’মিনি-ন।
অর্থ : এবং আল্লাহ মুমিনদের (মুসলমানদের) অন্তরসমূহ শান্ত করে দেন।
২. সুরা ইউনূসের ৫৭ নং আয়াত,
وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ: ওয়া শিফাউ’ল লিমা- ফিচ্ছুদু-রি ওয়া হুদাও ওয়া রাহমাতুল লিল মু’মিনি-ন।
অর্থ: এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।
৩. সুরা নাহলের ৬৯ নং আয়াত, –
يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ উচ্চারণ : ইয়াখরুঝু মিমবুতু-নিহা- শারা-বুম মুখতালিফুন, আলওয়ানুহু- ফি-হি শিফা-উন লিন্না-স।
অর্থ: তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার।
৪. সুরা বনি ইসরাইল ৮২ নং আয়াত, –
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ: ওয়া নুনাজ্জিলু মিনাল ক্বুরআ’নি মা হুয়া শিফাউও ওয়া রাহমাতিুল লিলমু’মিনি-ন।
অর্থ : আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত।
৫. সুরা আশ্-শোয়ারার ৮০ নং আয়াত, –
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
উচ্চারণ: ওয়া ইজা মারিদতু ফা হুয়া ইয়াশফি-নি।
অর্থ: এবং যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন
৬. সুরা হা-মীম এর ৪৪ নং আয়াত –
قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاءٌ
উচ্চারণ: কুল হুওয়া লিল্লাযীনা আ-মানূ হুদাওঁ ওয়া শিফা।
অর্থ: (বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার)
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন,
তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, আমি দোয়া করলাম, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না। (বুখারি ৬৩৪০)
হাদিসে এসেছে, হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনো ব্যক্তি (আল্লাহর কাছে) কোনো কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করেন। অথবা তদানুযায়ী তার থেকে কোনো অমঙ্গল প্রতিহত করেন। যতক্ষণ না সে কোনো পাপাচারে লিপ্ত হয় বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া করে। (তিরমিজি)
রসুল সা. বলেছেন, যদি কেউ চায় যে বিপদের সময় তার দোয়া কবুল হোক, তাহলে সে যেন সুখের দিনগুলোতে বেশি বেশি দোয়া করে (তিরমিজি ৩৩৮২)
হযরত সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দোয়া ছাড়া আর কিছুই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে না আর নেক আমল ছাড়া আর কিছুই বয়সে বৃদ্ধি ঘটায় না। (তিরমিজি ২১৩৯)
পিএনএস/এএ
রোগ থেকে মুক্তি পেতে কোরআনের যে ৬ আয়াত পড়বেন
20-05-2024 06:39PM