মমতা ব্যানার্জীকে যে পরামর্শ দিলেন অলি

  17-01-2025 04:07PM

পিএনএস ডেস্ক:ভারতকে আওয়ামী লীগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে বলে মনে করেন এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকেও পরামর্শ দিয়েছেন। যুগান্তর ডিজিটালের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ পরামর্শ দেন।

অলি আহমদ বলেন, আমি বহুবার বলেছি ভারতের উচিত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক করা- কোনো দালালের মাধ্যমে নয়, কোনো দলের মাধ্যমে নয়, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক করা। আমরা অকৃতজ্ঞ জাতি নই। ভারত যে আমাদেরকে সাহায্য করেছে সেটা আমরা হারে হারে স্মরণ করি। কিন্তু এর অর্থ এই না- আমরা তাদের অঙ্গরাজ্য। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। তাদেরকেও সুপ্রতিবেশী সুলভ ব্যবহার করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছেন- বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তি মিশনের সদস্য পাঠানো উচিত। আমি মমতা ব্যানার্জীকে পরামর্শ দেব ভারতের প্রত্যেকটা রাজ্যে মুসলমানদের ওপর কী অত্যাচার হচ্ছে সেটা পরিলক্ষণ করার জন্য প্রত্যেকটা রাজ্যে জাতিসংঘের শান্তি বাহিনী নিয়োগ করা উচিত; কাশ্মীরে শান্তি বাহিনী নিয়োগ করা উচিত; মমতা ব্যানার্জী কি সেটা পেরেছেন?

তিনি আরও বলেন, কাশ্মীরে যে এতগুলো লোক মারা যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানদের পিটিয়ে হত্যা করছে, রাস্তায় যখন মুসলমানরা নামাজ পড়ে তাদের পেছনে লাথি মারছে- মমতা কি সেগুলি দেখেন নাই। মমতাকে আমি অনুরোধ করছি- আপনি একজন সাধারণ টুরিস্ট হিসেবে বাংলাদেশে আসেন। এসে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জেলায় যান- কোনো হিন্দুর ওপর জুলুম করা হয় নাই। হয়তো কোনো কোনো আওয়ামী লীগ নেতার ওপরে কিছু কর্মকাণ্ড হয়েছে; কারণ তারা ১৫ বছর ধরে আমাদের ওপর অত্যাচার নিপীড়ন করেছে, অনেকের ঘরবাড়ি জ্বালায় দিয়েছে, ঘরবাড়ি দখল করেছে, ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করেছে, টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়েছে ও জেলে নিক্ষেপ করেছে। ওই নেতাদের ঘরবাড়ি দুই-একটা জ্বালায় দেওয়া হয়েছে। সেখানে যদি হিন্দু পরে থাকে সেটা তো হিন্দু হিসেবে হয় নাই- সেটা আওয়ামী লীগের একজন সদস্য হিসেবে হয়েছে। কিছুদিন আগে মুন্নী শাহকে আটক করা হলো, পরে ছেড়ে দেওয়া হলো। তাকে তো হিন্দু হিসেবে আটক করা হয় নাই।

তিনি বলেন, আরও অনেক হিন্দু আছেন যারা আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা ছিলেন- ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছিলেন উল্লেখ করে এলডিপির চেয়ারম্যান বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা নেওয়া হয়- ভারতের এটা ধরে নেওয়া উচিত না যে এটা হিন্দুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এটা আওয়ামী লীগের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সুতরাং ভারতকে এ পার্থক্যটা বুঝতে হবে- আওয়ামী লীগের সদস্য আর হিন্দু সম্প্রদায়।

এই নেতা বলেন, হিন্দু সম্প্রদায় তো খুব শান্তিতে আজ বসবাস করছে। হিন্দু সম্প্রদায় যেভাবে বিভিন্ন বড় বড় চাকরিতে অধিষ্ঠিত আছে- ভারতে কয়জন মুসলমান আছে- দেখাক ডাটা, বের করুক, কয়জন মুসলমান সেক্রেটারি আছে নাম বলুক; আর আমাদের এখানে কয়জন আছে দেখুক। পুলিশে কতজন আছে, সিভিল প্রশাসনে কতজন আছে, আর্মিতে কতজন আছে, নেভিতে আছে, এয়ারফোর্সে আছে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কয়জন আছে- আর ভারতে কয়জন মুসলমান আছে? সুতরাং ভারতের পক্ষে এগুলি মানায় না। যেখানে হিন্দুত্ববাদী প্রাধান্য পেয়েছে সেখানে মানায় না। আমাদের এখানে কিন্তু কোনো মুসলমানদের প্রাধান্য নাই। আমরা মনুষ্যত্বকে প্রাধান্য দিয়েছি- যার যার ধর্ম সে বিনা বাধায় পালন করবে; স্বাধীনভাবে পালন করবে; বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে পালন করবে। এটা কুরআনের শিক্ষা আমার নবির শিক্ষা- সেটাই আমরা পালন করি।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন