পিএনএস ডেস্ক: সরকারের পদত্যাগের পর সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির সমন্বয়করা গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সমন্বয়কদের পক্ষে নাহিদ ইসলাম ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এতে বলা হয়, ‘সরকারের নির্দেশে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। নারী-শিশু-ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক কেউ রেহাই পাননি। সরকার এ হত্যাযজ্ঞের বিচারের পরিবর্তে নির্বিচারে ছাত্র-জনতাকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করছে। সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যাযজ্ঞ সংঘটন করেছে। ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক-মজুরসহ আপামর জনগণ মনে করছে, এ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ বিচার এবং তদন্ত সম্ভব নয়; সেহেতু আমরা বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করছি। একই সঙ্গে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছি’।
অসহযোগ আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করেন সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। তিনি অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে সারাদেশের অফিস, আদালত ও কলকারখানা বন্ধ রাখতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, কেউ ট্যাক্স বা খাজনা দেবেন না। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিল পরিশোধ করবেন না। আপনারা কেউ অফিসে যাবেন না, মাস শেষে বেতন তুলবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাবেন না। সব ধরনের সরকারি সভা, সেমিনার, আয়োজন বর্জন করবেন। বন্দরের কর্মীরা কাজে যোগ দেবেন না। কোনো পণ্য খালাস করবেন না।’
শ্রমিকদের উদ্দেশে আসিফ বলেন, ‘গার্মেন্টকর্মী ভাইবোনরা কাজে যাবেন না। গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা কেউ কাজে যাবেন না। জরুরি ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য প্রতি সপ্তাহের রোববার ব্যাংক খোলা থাকবে। পুলিশ সদস্যরা রুটিন ডিউটি ছাড়া দায়িত্ব পালন করবেন না। দেশ থেকে টাকাও বন্ধে অফশোর লেনদেন বন্ধ থাকবে। বিজিবি ও নৌবাহিনী ছাড়া অন্য বাহিনী ক্যান্টনমেন্টের বাইরে দায়িত্ব পালন করবেন না। বিজিবি সীমান্তে থাকবে। আমলারা সচিবালয়ে যাবেন না, ডিসি বা উপজেলা কর্মকর্তারা নিজ নিজ কার্যালয়ে যাবেন না। বিলাসদ্রব্যের দোকান, শোরুম, বিপণিবিতান, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে, যাতে সরকারের কেউ দেশ থেকে পালাতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল, ফার্মেসি, চিকিৎসাসংক্রান্ত জরুরি সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন, জরুরি ইন্টারনেট সেবা, জরুরি ত্রাণ সহায়তা এবং এ খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহন সেবা চালু থাকবে। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
পিএনএস/আনোয়ার
জাতীয় সরকার চায় আন্দোলনকারীরা
04-08-2024 10:38AM