যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত থাকবে রোহিঙ্গাদের জন্য

  26-01-2025 07:45PM

পিএনএস ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করার পর নির্বাহী আদেশে আগামী ৯০ দিনের জন্য সব মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

প্রেস সচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য আমেরিকা বন্ধ করছে না। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার এ বছরই বড় আকারে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করবে। এতে ১৭০টি দেশ অংশ নেবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আয়োজিত সম্মেলনের সহআয়োজক জাতিসংঘ।

তিনি বলেন, রাখাইন প্রদেশে একটা বড় রকমের মানবিক বিপর্যয় হয়েছে। বিপর্যয়ের মূল কারণ হচ্ছে সেখানে একটা সিভিল ওয়ার চলছে। আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার আর্মির একটা বড় ধরনের ক্লেশ হচ্ছে। সেটার কারণে আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছেন। গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৭০ হাজার রোহিঙ্গা এসেছেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ৯০ দিনের জন্য বিদেশি সহায়তা স্থগিত করেছেন। রোহিঙ্গাদের পুষ্টি ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির অর্থায়ন ওই নির্বাহী আদেশের অন্তর্ভুক্ত থাকবে না। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টা ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে। রোববার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তারা প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছেন। তখন এ ধন্যবাদ বার্তা তাদেরকে জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার দাভোস সফর সম্পর্কে শফিকুল আলম বলেন, দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় প্রধান উপদেষ্টার অংশগ্রহণ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটা ঐতিহাসিক সফর ছিল। সভায় কমপক্ষে ৪৭টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার সুইজারল্যান্ড সফর বড় একটি অর্জন। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে প্রথমেই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য সবকিছু করার কথা জানিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, জার্মানি ইউরোপের ক্ষমতাধর দেশগুলোর একটি। বৈঠকে ওলাফ শলৎস স্ব-উদ্যোগে বাংলাদেশে বিজনেস ডেলিগেশন, স্পেশাল ডেলিগেশন পাঠানোর কথা জানিয়েছেন। তারা এসে নীতি-নির্ধারক ও দেশের বাণিজ্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন। আমরা মনে করি, এর মাধ্যমে জার্মানির সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে।

প্রেস সচিব বলেন, সফরে পতিত সরকারের বিদেশে পাচার করা ২৩৪ বিলিয়ন ডলার কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ফিনল্যান্ড, জার্মানি, সুইজারল্যান্ডের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর।

তিনি বলেন, পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনা খুবই স্লো প্রসেস। এটির জন্য যত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সরকার সেই পদক্ষেপই নিয়েছে। সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে টাস্কফোর্স, অ্যাসেট রিকভারি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ১১টা টিম কাজ করছি। সারা বিশ্বের টপ টপ এজেন্সির সঙ্গে কথা বলছি। পাচার করা টাকা ফেরত আনা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, যে টাকা পাচার হয়েছে সেটা বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের টাকা। তাদের টাকা চুরি করে নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনার চোরত্রন্ত্রের লোকজন। সেই টাকা আমরা যেভাবে হোক ফিরিয়ে আনব। সেটার জন্য আমরা গ্লোবালি একটা সমর্থক চাচ্ছিলাম। সেটাতে সবাই অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে। এটা আমাদের টপ প্রায়োরিটি। প্রফেসর ইউনুস যখনই বিশ্বের টপ লিডারদের সঙ্গে কথা বলছেন তখন তিনি এ বিষয়টা তুলছেন।

প্রেস সচিব বলেন, জুলাই-অগাস্টের নৃশংসতা নিয়ে জাতিসংঘ শিগগিরই তার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন- পালাবেন না, কিন্তু পালিয়েছেন। তার চেলা-চামুন্ডারাই সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশের কসাই। যারা গুজব ছড়াচ্ছেন এটা যদি আইনের ভঙ্গ হয়, তবে আইনগতভাবে তা দেখা হবে।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন