‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পে ত্রুটি দেখছেন শিক্ষাবিদরা, ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে ভিন্নমত

  26-01-2024 12:05PM



পিএনএস ডেস্ক: পাঠ্যপুস্তক ছেড়ে মানববন্ধন কিংবা অবস্থান ধর্মঘট অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি বইয়ের ছেঁড়া এ পাতাটির গল্প ‘শরীফ থেকে শরীফা’ বেশ আলোচিত-সমালোচিত। থার্ডজেন্ডার নাকি ট্রান্সজেন্ডার? চলছে আন্দোলন, চলছে পাল্টা-পাল্টি যুক্তিতর্ক।

‘শরীফ থেকে শরীফা’ ইস্যুতে কিছুটা বিপরীত মেরুতে ট্রান্সজেন্ডার ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। ভিন্নমত আছে ধর্মীয় ও প্রগতিশীলদের মাঝেও। কিন্তু যে থার্ড জেন্ডার আর ট্রান্সডেজন্ডাকে নিয়ে এতো টানাহেঁচড়া, চলমান বিতর্কে কী ভাবছেন তারা? দুটো বিষয় কি এক নাকি সম্পূর্ণ আলাদা? তবে নেতিবাচক বিতর্ক না বাড়িয়ে গল্পটিতে ধারণাগত ত্রুটির দিকে নজর দেয়ার পরামর্শ শিক্ষাবিদদের।

থার্ডজেন্ডার রাখি শেখ জানান, চাইলেতো আর মেয়ে হওয়া যায় না। আমি নিজেকে মেয়ে দাবি করলাম আর মেয়ে হয়ে গেলাম। থার্ডজেন্ডার আর ট্রান্সজেন্ডার এক না। তিনি বলেন, থার্ডজেন্ডার আর ট্রান্সজেন্ডার কোনটাই কমিউনিটির অংশ না।

শিক্ষা গবেষকের মতে, ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গকে পরিচয় করাতে গিয়ে ট্রান্সজেন্ডারের অবতারণা করাটা ধারণাগত ত্রুটি। আর সমাজকল্যাণ গবেষক মনে করেন বিষয়টি উচ্চ শ্রেণির পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তি করা হলে তা কার্যকরী হতে পারতো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হাফিজউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ক্লাসের পাঠ্যসূচিতে যদি অন্তভুক্তি করতে তা হলে আমাদের হিজড়া সম্প্রদায়কে ফোকাস করা জরুরি এবং এটা প্রয়োজনে সপ্তম শ্রেণি থেকে আরও ওপরের ক্লাশে নেয়া যেতে পারে, যাতে করে তারা বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম বলেন, ‘শরীফ থেকে শরীফা’ মানসিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে তার যে শারিরীক পরিবর্তন দেখানো হয়েছে সেটা ট্রান্সজ্যান্ডর হিসেবে ধারণা দেয়। আবার একই সঙ্গে পরবর্তীতে ফোকাস করা হয়েছে হিজড়ার বিষয়ে। সুতারং এটা তথ্যগত ভ্রান্তি যেটা সংশোধন করা যেতে পারে।

শিক্ষা গবেষকের মতে, যেকোন বিষয়ে ভিন্নমত থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে যে উপায়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে তা কাঙ্খিত নয়। এ বিষয়ে প্রতিবাদের ভাষা এমন হওয়া উচিত নয়।

পাঠ্যপুস্তকের একটি গল্প আবারও রেখা টেনেছে ধর্ম ও প্রগতিশীল কর্মীদের মাঝে। তাই ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতেই ধর্ম ও প্রগতিশীলদের অবস্থান।

এ বিষয়ে ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো প্রকার পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা চলবে না। অর্থ্যাৎ মৌলিক কোনো পরিবর্তন করার সুযোগ নেই।

আর মানবাধিকার কর্মী খুশি কবীর জানান, সংবিধান সব নাগরিককে সমান অধিকার দিয়েছে। তাই ভিন্নতা আমাদের মেনে নিতে হবে। তিনি মনে করেন, এ বিষয়টা সরকারকে আরও স্পষ্ট করা উচিত।

প্রসঙ্গত, সপ্তম শ্রেণির বইয়ের শরীফা গল্পের সমাধান টানতে কমিটি গঠন করেছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। তবে শেষ পর্যন্ত জল কোন দিকে কতটুকু গড়ায় তা ভবিষ্যতে বলা যাবে। চ্যানেল 24


পিএনএস/এমএইউ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন