গণহত্যার কোনো ক্ষমা হতে পারে না: মির্জা ফখরুল

  31-10-2024 07:04PM

পিএনএস ডেস্ক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণহত্যার কোনো ক্ষমা হতে পারে না। বিভিন্ন ডামাডোলে আমরা যেন ভুলে না যাই, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা গণহত্যা করেছে। এখানে কোনো ক্ষমা নেই। ওই জায়গায় আমাদের খুব শক্তভাবে থাকতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল’ (জেএসডির) ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার পর অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রথম যে দলটি দাঁড়িয়েছিল, সে দলটি হলো জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল। প্রথম যিনি প্রতিবাদ করেছেন, তিনি হলেন আ স ম আব্দুর রব। রাষ্ট্রের কাঠামো পরিবর্তনের কথা অনস্বীকার্য বলায় জেএসডিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সময়টা খুব সতর্কতার সাথে অতিক্রম করতে হবে। ধৈর্য ধরে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে একটাই দায়িত্ব দিয়েছি, ভয়াবহ জঞ্জাল দূর করে অর্থবহ একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করার। রাষ্ট্র সংস্কারের দফা, আমরা ৩১ দফাতে দিয়েছি। জোর করে চাপিয়ে দেয়া কোনো সংস্কার টেকসই হয় না। জনগণের যদি কোনো সমর্থন না থাকে, তবে সে সংস্কার কোনোভাবেই সাস্টেবল হয় না।

‘বিএনপি কোনো বিপ্লবী রাজনৈতিক দল নয়, এটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী’। ৪৭’ পর থেকে অর্থাৎ পাকিস্তান আমল থেকে এদেশে কোনোদিন গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি বলে জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আস্থার জায়গা থেকে বলতে পারি, এ ইউনূস সরকার সফল হবে। তিনি সমাদৃত। সচেতন হয়ে আপনারা (উপদেষ্টারা) কাজ করবেন। আমরা চিন্তিত তখনই হই, আমরা তখনই আমাদের খটকা লাগে, উদ্বিগ্ন হই, যখন সরকারের থাকা উপদেষ্টারা এমন কোনো কথা বলেন। এমন কোনো কথা বলবেন না, এমন কাজ করবেন না যেটি জনমনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি হতে পারে।

তিনি বলেন, সম্ভবত স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেছেন যে চার বছর আমাদের সরকারের মেয়াদ- এ সব কথা তার বলার কথা না, তারা তো কমিশন গঠন করেছেন, সেই কমিশন প্রস্তাব দিবে, জনগণ গ্রহণ করবে, তারপর না হয় সেটি চার বছর না কি পাঁচ বছর সেটি সিদ্ধান্ত হবে। এমন কাজ তো হাসিনাও করতেন, কোনোকিছু তিনি চার-পাঁচ বছর আগেই বলতেন। এমন কোন কথা কখনো আপনাদের সঠিক পথে নিয়ে যাবে না। এমন কথা না বলার অনুরোধ করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি আরো বলেন, আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া জনগণকে কেউ উপস্থাপন করতে পারে না। নির্বাচন তাড়াতাড়ি হলেই রাষ্ট্র সংস্কার কাজ তাড়াতাড়ি করা যায়। ফাঁক থাকলেই স্বৈরাচারের দোসররা, যারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমাদের বিপ্লবের সমস্ত কিছুকে ধ্বংস করতে, বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে, তারা সুযোগ পেয়ে যায় এবং পাচ্ছে।

বিভিন্ন মহল থেকে দাবি দাওয়া উঠছে এমন কথা জানিয়ে তিনি প্রশ্ন রাখেন, এ দাবি দাওয়া আগে তুলেন নাই কেন? একটু অপেক্ষা করার কথা জানান তিনি।

‘বিদেশী সাংবাদিক, বিশেষ করে ভারতের সাংবাদিকরা আমাকে ফোন করে প্রশ্ন করে, জানতে চায় যে স্যার, ড. ইউনূস সাহেব কি ফেল করছেন’ প্রতি উত্তরে বলি, তার দিকে তো গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে, আস্থাশীল। আমরা তো দেখছি, তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে দেশ চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন মির্জা ফখরুল।

বাজারের অবস্থা খুব ভালো না- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম চড়া। এ বিষয়ে আমাদের সবার কথা বলা দরকার। সকল সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। সবাই মিলে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। দেশকে একবারে ফোকলা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন