শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রাথমিকে কর্মঘণ্টা বাড়াতে সুপারিশ করবে কমিশন

  25-12-2024 06:17PM

পিএনএস ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমেদকে প্রধান করে করা এই কমিটির কাজ শেষের দিকে।

আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম দিকে দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কর্মঘণ্টা বাড়ানোসহ সামগ্রিক বিষয়ে একটি সুপারিশ করবে কমিটি। শুধু কর্মঘণ্টা নয়, শিক্ষক সংকট নিরসন, শিক্ষকদের যথার্থ প্রশিক্ষণ, বেতনবৈষম্য দূর করাসহ নানা বিষয় নিয়ে কমিটি কাজ করছে। কমিটির সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন-ভাতার অসংগতি দূর করা।

‘প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন পরামর্শক কমিটি’র সদস্যরা জানান, দেশের ৮০ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় দুই শিফটে চলে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিখন ঘণ্টাও পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক কম। কর্মঘণ্টা বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করবেন তারা। যদিও প্রাথমিকের শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের কর্মঘণ্টা আরো কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন।

সবশেষ গত ১৯ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মঘণ্টা কমানোর দাবি জানায় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ। তারা বিদ্যালয়ের সময়সূচি সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত, অর্থাৎ ৫ ঘণ্টা করার দাবি জানান।

পরামর্শক কমিটির প্রধান ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীর শেখার ক্ষেত্রে যে বিরাট ঘাটতি থেকে যাচ্ছে, সেটি কীভাবে পূরণ করা যায়, তা আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সুযোগ-সুবিধা ও শেখার ঘাটতি সমন্বিতভাবে উন্নতিতে কমিটি কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা দাবদাওয়া আছে। অবকাঠামো, ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা সমস্যাও রয়েছে। আমরা হয়তো সুপারিশ করব। সেখান থেকে কতটুকু বাস্তবায়ন করা হবে, সেটা সরকার জানে। সুপারিশে আমাদের কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষাও থাকবে।’

সূত্র জানায়, শিক্ষকদের বেতন-প্রশিক্ষণ নিয়ে সংস্কার কমিটির ভাবনা হলো, বর্তমানে শিক্ষকরা দশম গ্রেড না পেলেও অনেকেই সেই পরিমাণ বেতন পাচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষকদের একটা গ্রেড রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এক বা দুই বছর শিক্ষকতার পর তারা উচ্চতর গ্রেডে যাবে। এরপর কিছু শর্ত পূরণ করে পেশাগত দক্ষতা দেখাতে পারলে তাদের পদোন্নতি দেওয়া হবে। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে ধাপে ধাপে তাদের সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

তাছাড়া শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিষয়ে কমিটির মতামত হলো :- বিপিএড প্রশিক্ষণ খুব বেশি কাজে আসছে না। সেখানে শিক্ষকরা শুধু মেশিনের মতো ক্লাস করছেন। খুব বেশি মাথায় নিতে পারছেন না। শিক্ষক প্রশিক্ষণের ‘মডেল টিচিং-লার্নিং’ মানা হচ্ছে না। ফলে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কাজে আসছে না। প্রশিক্ষণের টিচিং প্রক্রিয়া আরো উন্নত করতে হবে।

অধ্যাপক ড. মনজুর আহমেদ বলেন, ‘আমরা চাই, প্রাথমিকের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা যাতে দায়বদ্ধতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেজন্য যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও শর্ত তৈরি করা দরকার, আমরা সেই সুপারিশ করব। ডিসেম্বরের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জানুয়ারিতে হয়তো আমরা সরকারকে এ সুপারিশ দিতে পারব।’

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন