পিএনএস ডেস্ক: দেশের সব আদালতের বিচারকদের নিরাপত্তায় কোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে এই পৃথক সিএসএফ গঠনের দাবি অধস্তন আদালতের বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রচার সম্পাদক মো. মোস্তানছির রহমানের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগ মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির শেষ আশ্রয়স্থল এবং একটি রাষ্ট্রের সভ্যতার মাপকাঠি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা নির্বাহী বিভাগের পবিত্র দায়িত্ব। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও সুপ্রিম কোর্ট একটি কার্যকর ও স্বাধীন বিচারবিভাগ প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইন প্রণয়ন, পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠন এবং স্থায়ী আর্টনি সার্ভিস প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করে জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে বলে আমরা আশা করছি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিচার বিভাগের সংস্কার যখন চলমান ঠিক সেই মুহূর্তে আমরা বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা লক্ষ্য করেছি, যা একটি স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য হুমকিস্বরূপ। গত ২৬ জানুয়ারি একদল বিক্ষুব্ধ জনতা গঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের চারজন বিচারকের অপসারণ দাবি করে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং বিচারকদের আবদ্ধ করে তাদের মধ্যে জীবননাশের ভীতি সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা আদালতের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে আদালতের কর্মচারীদের মারধর এবং আদালত ভবনের জানালা-দরজা ভাংচুর করেন।
ইতোপূর্বে মুন্সিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, বরগুনা (পাথরঘাটা), কুষ্টিয়া, নওগাঁ ও দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আদালতের আইনানুগ আদেশকে কেন্দ্র করে বে-আইনিভাবে সভা, সমাবেশ, মিছিল ও আদালত ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচী আমরা লক্ষ্য করেছি। এতে বিচার বিভাগের মর্যাদা যেমন ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তেমনি আদালতে বিচার কাজ পরিচালনার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
এসব আপত্তিকর ঘটন বর্তমান সরকার এবং পুরো বিচার বিভাগের জন্য বিব্রতকর বলে অ্যাসোশিয়েশন মনে করে। নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ স্বাধীন হলেও আদালতের ওপর এসব অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ দূর করতে না পারলে মাঠ পর্যায়ে বিচারদের স্বাধীন কাজ করার পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। এমন ঘটনার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এর নেতিবাচক প্রভাব পুরো বিচার বিভাগের ওপর পড়বে বলে অ্যাসোসিয়েশন মনে করে।
অ্যাসোসিয়েশন বলছে, কোনো বিচারক বেআইনি কাজ করে থাকলে বিধিসম্মতভাবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তা না করে আদালত চত্বরে হট্টগোল, বেআইনি সমাবেশ, বিচারকদের অবরুদ্ধ করা, আদালতের কর্মচারীদের মারধর ও আদালত ভবনে ভাংচুর করে বিচারকদের দমিয়ে রাখার প্রচেষ্টা রাষ্ট্র ও বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের প্রচেষ্টা।
জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পঞ্চগড় আদালতে সংঘটিত ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জোর দাবি জানায়।
এসএস
নিরাপত্তায় বিশেষ বাহিনী চান বিচারকেরা
29-01-2025 09:31PM