সাবেক এমপি মুন্নাসহ ৪৭ জনের নামে মামলা

পিএনএস ডেস্ক: সিরাজগঞ্জ: ২০১৪ সালে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে বিএনপিকর্মী জাহাঙ্গীর হোসেন হত্যায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন ও সাবেক পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তাসহ আওয়ামী লীগের ৪৭ নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম নাজমুল ইসলাম বলেন, গত ২৬ জানুয়ারি নিহত জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী রোজিনা খাতুন বাদী হয়ে ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে কামারখন্দ থানা আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে কামারখন্দ থানাকে এজাহারভুক্ত করে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

নিহত জাহাঙ্গীর হোসেন সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সদর উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার অপসারিত মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জানপুর মহল্লার বদরুল আলম, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আজিজল তালুকদার, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হাকিম ও সয়দাবাদ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নবীদুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে আসামিদের রাজনৈতিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব ছিল। ওই সময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বদরুল আলম ও সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম রাজা তার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা জাহাঙ্গীর হোসেনকে মারধর, হত্যা ও গুম করার পরিকল্পনা করতে থাকেন। এ অবস্থায় ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে জাহাঙ্গীর হোসেনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান আসামিরা।

২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম বাদীকে ফোন করে জাহাঙ্গীরকে অপহরণের কথা জানান এবং তার মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। এক সপ্তাহ পর ৭ ও ৯ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় নবীদুল ইসলামকে ১০ লাখ টাকা দেন বাদী। এরপরও জাহাঙ্গীরকে মুক্ত করে দেওয়া হয়নি। ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ওভারব্রিজের দক্ষিণ দিক থেকে জাহাঙ্গীরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় একইদিন ঝাঐল ইউপির দফাদার শচীন চন্দ্র দাস বাদী হয়ে কামারখন্দ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশি তদন্ত শেষে আসামি শনাক্ত না করেই আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ঘটনার পরই বাদী মামলা দায়ের করতে চাইলে আসামিরা তাকেও হত্যার হুমকি দেওয়ায় ওই সময় মামলা দায়ের করতে পারেননি বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী।

পিএনএস/রাশেদুল আলম