বায়ুদূষণে আজও শীর্ষে ঢাকা

  03-02-2025 09:17AM


পিএনএস ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণের কারণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে বাস করছে রাজধানীর মানুষ। বাইরে বের হলেই নিঃশ্বাসের সঙ্গে চরম অনিরাপদ বাতাস গ্রহণ করে যেতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগে প্রতিনয়তই ভিড় বাড়ছে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে, যার পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী এই দূষিত বাতাস।

ঘনবসতি এবং যানবাহন ও শিল্পকারখানার কালো ধোঁয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী দূষিত বাতাসের শহরগুলোর মধ্যে প্রতিদিনই প্রথমদিকে জায়গা করে নিচ্ছে ঢাকা, যার ব্যতিক্রম ঘটেনি আজও।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে ঢাকা। সবশেষ আপডেট অনুযায়ী, এখানকার দূষণ স্কোর রেকর্ড হয়েছে ২৪৩। অর্থাৎ, খুবই অস্বাস্থ্যকর আজ দেশের রাজধানীর বাতাস।

এর আগে, গতকাল রোববারও (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার শীর্ষে ছিল ঢাকার নাম। এদিন সকাল ১০টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ঢাকার বায়ুমান ছিল ৩৯৫; যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ জনস্বাস্থ্যের জন্য।

দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার পরেই অবস্থান করছে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন। ২২৬ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে শহরটি। আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, এ শহরটির বাতাসও অস্বাস্থ্যকর। তালিকার শীর্ষ পাঁচে আছে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তানের শহর লাহোর। ১৮২ স্কোর নিয়ে বিশ্বব্যাপী দূষিত শহরের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে শহরটি।

এছাড়া, ১৭৭ ও ১৭৪ আইকিউএয়ার স্কোর নিয়ে তালিকার যথাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম অবস্থানে আছে ভারতের দিল্লি ও কলকাতা।

মূলত, একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্টের ওপর ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম-১০ ও পিএম-২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।

বস্তুকণা পিএম-২.৫ হলো বাতাসে থাকা সব ধরনের কঠিন এবং তরল কণার সমষ্টি, যার বেশিরভাগই বিপজ্জনক। মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন— প্রাণঘাতী ক্যান্সার এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করে পিএম-২.৫। এছাড়া বায়ু দূষণকারী এনও২ প্রধানত পুরোনো যানবাহন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিল্প স্থাপনা, আবাসিক এলাকায় রান্না, তাপদাহ এবং জ্বালানি পোড়ানোর কারণে তৈরি হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শুধুমাত্র বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে বিশ্বজুড়ে।


পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন