আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে বাড়ছে ফসলের উৎপাদন

  06-01-2024 10:36AM



পিএনএস ডেস্ক: ধানসহ বিভিন্ন ফসলের জাত আবিষ্কার করে খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর মূল কারিগর বিজ্ঞানীরা। এছাড়া কৃষিতে কৃষকরা আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করায় কম খরচে বাড়ছে উৎপাদন।

কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার গৌরবোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। ১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রহ্মপুত্র নদের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বাকৃবি আজ দক্ষিণ এশিয়ার কৃষি শিক্ষার অন্যতম বিদ্যাপীঠ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের কৃষি গবেষণায় অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। বাকৃবির রয়েছে অসংখ্য গৌরবময় অর্জন।

এর মধ্যে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প উদ্ভাবন, বাউ ধান-৩, ডেঙ্গুর সিরোটাইপ নির্ণয় প্রযুক্তি, মানুষ ও পশুর ব্রুসেলোসিস রোগের জীবাণু শনাক্তকরণ, ইলিশ ও ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জিন রহস্য উন্মোচন, হিমায়িত ভ্রূণ হতে ভেড়ার কৃত্রিম প্রজনন ও শুকনো মৌসুমে বোরো ধান চাষের প্রযুক্তির উদ্ভাবন অন্যতম। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ ও মাছের কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি আবিষ্কার, শস্য ও পশুর একাধিক জাত উদ্ভাবনের মতো কৃষির সম্প্রসারণ এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে এখন অনন্য উচ্চতায় বাকৃবি।

বাকৃবি চত্বরে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিনা)। এ প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন করা বিনা-১৬ ও বিনা-১৭ ধান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এরমধ্যে বিনা ধান-১৭ খরা সহিষ্ণু স্বল্পমেয়াদি। সার কম লাগে উন্নত গুণাগুণ সম্পন্ন আমন ধানের এ জাতে। লবণাক্ত এলাকা ছাড়া দেশের সব রোপা আমন অঞ্চল বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে জাতটির অধিক ফলন পাওয়া যায়। বিনা ধান-১১ বন্যা সহিষ্ণু এবং অধিক ফলনশীল। এ আমন ধানের জাত ২৫ দিন পর্যন্ত পানিতে সম্পূর্ণ ডুবে থাকলেও মারা যায় না।

বিনা উদ্ভাবিত ধানের বিভিন্ন জাত ছাড়াও তেল জাতীয় ফসল, ডাল ফসল, গম, পাট, সবজি, মসলা এবং লেবুর নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এতে দেশের কৃষি গবেষণা, কৃষি সম্প্রসারণ এবং কৃষি শিক্ষায় এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

একসময় লাঙল-জোয়াল আর হালের বলদ চাষাবাদের মূল উপকরণ ছিল। এখন সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, কম্বাইন হারভেস্টার, ব্রডকাস্ট সিডার পাওয়ার রিপার মেশিন। এমনকি ফসল ফলানোর জন্য জমি চাষ, বীজ বপন, নিড়ানি, সার দেওয়া, কাটা, মাড়াই, ফসল ঝাড়া থেকে প্যাকেটিং পর্যন্ত- সবকিছুই করা হচ্ছে প্রযুক্তির মাধ্যমে। ফলে কৃষিতে উৎপাদন বাড়ছে, কমছে উৎপাদন ব্যয়।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম জানান, কৃষিখাতে অর্জনে বিজ্ঞানীদের অনেক অবদান রয়েছে। সরকারের সহায়তা ও সুযোগ-সুবিধার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। অল্প জমিতে বেশি ফসল ফলানোর মতো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন করা হয়েছে। উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বেশির ভাগ ফসল চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা। কারণ এসব জাত চাষে খরচ যেমন কম, তেমনি উৎপাদন বেশি হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী জানান, গবেষকদের ক্লান্তিহীন গবেষণার কারণেই বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে বেশি ফসল উৎপাদন করছেন কৃষকরা।


পিএনএস/এমএইউ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন