পিএনএস ডেস্ক: উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমাতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে সচিবালয়ের তিন নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হন তারা।
সংযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, কয়েক শ’ কর্মকর্তা সচিবালয়ের লাইব্রেরিতে অবস্থান নিয়েছেন।
প্রশাসন ক্যাডারের কয়েক শ’ কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোখলেস উর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের দাবি-দাওয়া পেশ করবেন। তবে বেলা ১২টা পর্যন্ত জনপ্রশাসন সচিব তার দফতরে আসেননি।
গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তারা। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে এই কমিশনের প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে।
তবে বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়া হয়।
কমিশনের সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, জনপ্রশাসনে উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি; উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ শতাংশ ও অন্য ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ বরাদ্দ করা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রেখে আলাদা রাখা।
কমিশনের সুপারিশের বিষয়গুলো সামনে আসার পরই এ ব্যাপারে প্রশাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। একইদিন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখা সভাও করেছে। পদাধিকারবলে জেলা প্রশাসকেরা এই সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। জেলা প্রশাসকেরা সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে কার্যবিবরণী পাঠিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরছেন।
প্রশাসন ক্যাডার উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত সব পদে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদায়ন চায়। অন্যদিকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা তাদের ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রাখার সুপারিশের বিপক্ষে। মানে তারা ক্যাডারেই থাকতে চান।
এরই মধ্যে ২৫টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত ‘আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় একটি সভা করে। সভায় পরিষদের সাথে পরিষদভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের পৃথক সংগঠনের নেতাদের মতবিনিময় হয়। সভা থেকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দিয়ে পরিচালনা ও কোটামুক্ত উপসচিব পুলের দাবিতে কলমবিরতিসহ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামীকাল সোমবার প্রতিটি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এ বিষয়ে বিবৃতি দেবে। পরদিন মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা সব অফিসে কলমবিরতি। ২৬ ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সব অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন। আর যেসব বিভাগে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়নি, দ্রুত সেখানে সমাবেশ আয়োজন ও জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো। এ ছাড়া আগামী ৪ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ আয়োজন করা হবে। সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
পিএনএস/আনোয়ার
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে প্রশাসন ক্যাডারদের অবস্থান
22-12-2024 02:02PM