মাটিরাঙ্গায় পেঁয়াজ চাষে সফলতা

  13-03-2025 10:41AM


পিএনএস ডেস্ক: গ্রীষ্মকালীন ও উচ্চ ফলনশীল পেঁয়াজের জাত এন-৫৩। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এর আবাদ হলেও খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবারের মতো এর চাষ শুরু হয়েছে।

এন-৫৩ পেঁয়াজ চাষে খরচ খুবই কম। কিন্তু দ্রুত বর্ধনশীল এবং স্বল্পসময়ে লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য অঞ্চলে এর চাষে আগ্রহ বাড়ছে। মাটিরাঙ্গায়ও এর চাষ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এই পেঁয়াজের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, অক্টোবর, নভেম্বর—এই দুমাস বীজ বপন করে ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে তা সংগ্রহ করা যায়। বিঘাপ্রতি ফলন পাওয়া যায় ৭০ থেকে ৮০ মণ। প্রতিটি পেঁয়াজের ওজন ২৫০ থেকে ৩৫০ গ্রাম হয়। প্রতি কেজির বাজারদর ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রণোদনার আওতায় এখানে প্রথমবারের মতো ২০ কৃষকের মাঝে ১ কেজি করে এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজের বীজ, রাসায়নিক সার, পলিথিন ও বালাইনাশক বিতরণ করা হয়। এবার পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলার ১ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদন হতে পারে ৩৫ থেকে ৪০ টন।

মাটিরাঙ্গার চড়পাড়া, ওয়াছু এলাকায় দেখা যায়, ফসলি বড় মাঠের এক টুকরো জমিতে সারি সারি পেঁয়াজ গাছ। গাছের গোড়ায় উঁকি দিচ্ছে বড় আকারের পেঁয়াজ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, পাহাড়ের মাটিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে।

ওয়াছু এলাকার কৃষক মো. হানিফ বলেন, মাটিরাঙ্গা কৃষি অফিসের পরামর্শে অল্প জমিতে এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করি। বিনামূল্যে বীজ, সার এবং পরামর্শসহ অন্যান্য উপকরণ কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে পেয়েছি। ভালো ফলন হয়েছে। আশা করি ভালো দামও মিলবে।

চড়পাড়ার কৃষক আব্দুর রব বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নতুন এই পেঁয়াজের আবাদে আমাদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। আমি অল্প পরিসরে পেঁয়াজ চাষ করি। প্রথমবারেই ভালো ফলন হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা সবসময় পরামর্শ দিচ্ছেন। কৃষি অফিসের সহায়তা পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে এর চাষ করব।

মাটিরাঙ্গা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ চাকমা জানান, সঠিক পরিচর্যা ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পেঁয়াজ চাষ থেকে মুনাফা করা সম্ভব। অসময়ের এই ফসলে এরই মধ্যে কৃষকের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের পাশে আছে। আগামী বছর এর চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ আলী বলেন, স্থানীয় ভাবে পেঁয়াজ সংকট কমাতে এন-৫৩ জাত চাষে উপজেলা কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহায়তা ও পরামর্শ দিয়েছে। ফলে এর চাষে সফলতা মিলেছে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন কৃষক। সেইসঙ্গে স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজ সংকট কমে যাবে। মাটিরাঙ্গা উপজেলার মাটি পেঁয়াজ চাষে বেশ উপযোগী। তাই গ্রীষ্ম এবং শীতকালীন পেঁয়াজের চাষ বাড়িয়ে নিত্যপণ্যটির আমদানি নির্ভরতা কমানো যেতে পারে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন