রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক-বাজার মনিটরিং থেকে সরে আসার ঘোষণা

  19-08-2024 09:03PM

পিএনএস ডেস্ক: রাজশাহী মহানগর এবং জেলায় সব ধরনের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, বাজার মনিটরিং ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পাহারা থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। তবে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিয়মিত আন্দোলন চলবে।

এছাড়া ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে যে কোনো ব্যক্তির আর্থিক লেনদেন, সুবিধা প্রদান এবং ক্ষমতা চর্চার সব ধরনের সুযোগ প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘোষণাসহ বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তের কথা জানান ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয়ক পরিষদের সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম। তিনি বলেন, সহস্রাধিক শহিদ ও দুই হাজারের কাছাকাছি আহত এবং পঙ্গুত্ববরণকারী ভাইবোনদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের এই ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতার সূচনা’। বিপ্লব পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। পুলিশ এবং প্রশাসন দায়িত্বে ফিরে এসেছে। এ পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সার্বিক বাস্তবতা বিবেচনায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

তাদের সিদ্ধান্তগুলো হলো- রাজশাহী মহানগর এবং জেলায় সব ধরনের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, বাজার মনিটরিং এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পাহারা থেকে শিক্ষার্থীরা সরে যাবে। এসব স্থানে রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ তাদের কর্তব্য পালন করবে; শুধুমাত্র রাত্রিকালীন নিরাপত্তার স্বার্থে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ১০ জনের বেশি নয় এমন সংখ্যক শিক্ষার্থী পাহারার দায়িত্ব পালন করতে পারেন। তবে অবশ্যই শিক্ষার্থী পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে পুলিশকে সর্বাত্মক সহায়তা করা; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীতে কেন্দ্র ঘোষিত সমন্বয়ক পরিষদ ছাড়া কোনো ধরনের সমন্বয়ক নেই। রাবি পরিষদসহ ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে যেকোনো ব্যক্তির আর্থিক লেনদেন, সুবিধা প্রদান কিংবা ক্ষমতা চর্চার সব ধরনের সুযোগ প্রতিহত করা; দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিয়মিত আন্দোলনের বাইরে রাজশাহী জেলা ও মহানগরের অন্যান্য কার্যক্রম আপাতত স্থগিত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মোহাম্মদ মেশকাত চৌধুরী বলেন, শহরে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য এবং তাদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অনেকেই সমন্বয়ক, সহ-সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থী পরিচয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যেই মূলত তাদের এসব সিদ্ধান্ত।

ক্যাম্পাসে রাজনীতি থাকা না থাকা নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে সব ধরনের লেজুড়বৃত্তিভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করে রাকসু চালু করতে হবে। এক্ষেত্রে তারা সবসময় রাজপথে সোচ্চার থাকবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষ না থাকায় এখনো একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আরেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের দ্রুত নিয়োগ দিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো ফিরিয়ে আনতে তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানাবেন। এছাড়া অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় সভাপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই একাডেমিক কার্যক্রম চালু করার জন্য আহ্বান জানাবেন তারা।

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন