বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ ভারতের হোটেল

  03-12-2024 01:56AM

পিএনএস ডেস্ক: ত্রিপুরা রাজ্যের সব হোটেল বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের হোটেল এসোসিয়েশন।

সম্প্রতি ত্রিপুরার রাজ্যের হোটেল এসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষের এক জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে হোটেলগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার পেছনে কারণও জানিয়েছেন তারা। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ঘটনার কারণে তারা এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানানো হয়।

এদিকে, ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা ও অন্যান্য এলাকায় বাংলাদেশি পর্যটকদের কিছু আচরণ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে- হোটেলগুলির সঙ্গে তাদের আর্থিক লেনদেন এবং বৈধ নথিপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে।

এ প্রসঙ্গে হোটেল এসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বাগত জানাই এবং তাদের জন্য হোটেল পরিষেবা প্রদানে বরাবরই আগ্রহী। তবে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুরক্ষা এবং নিয়মাবলীর প্রতি সম্মান জানিয়ে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

কেন বন্ধ হলো পরিষেবা?
ত্রিপুরায় বাংলাদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি সবসময়ই বিশেষভাবে নজর কাড়ে। বিশেষ করে আগরতলা এবং আশেপাশের এলাকায় বাংলাদেশি পর্যটকরা চিকিৎসা, কেনাকাটা এবং ঘুরতে আসেন। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু হোটেলে বাংলাদেশি পর্যটকদের পাসপোর্ট এবং ভিসার সঠিক নথি না থাকা এবং হোটেলে অবস্থানের সময় নিয়ম না মানার অভিযোগ ওঠে।

এছাড়া, হোটেল মালিকরা অভিযোগ করেছেন যে অনেক সময় পর্যটকদের সঙ্গে সঠিক যোগাযোগের অভাব এবং তাদের লেনদেনে অসুবিধা দেখা যায়। কিছু ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।

পরিস্থিতির প্রভাব
এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নাগরিকদের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে, যারা চিকিৎসা বা ব্যক্তিগত কারণে নিয়মিত ত্রিপুরা ভ্রমণ করেন। বিশেষত, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে ত্রিপুরায় আসা পর্যটক এবং চিকিৎসা-প্রার্থী মানুষদের জন্য এটি একটি বড় সমস্যা হতে পারে।

বাংলাদেশের পর্যটকরা ত্রিপুরার হোটেল ব্যবসায় বড়সড় ভূমিকা পালন করেন। চিকিৎসা এবং অন্যান্য কাজে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের কারণে ত্রিপুরার অর্থনীতিতে ভালো প্রভাব পড়ে। তবে এই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হোটেল ব্যবসার উপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

সমাধানের পথে আলোচনা
হোটেল এসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞা স্থায়ী নয়। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে এবং নতুন নিয়মাবলী তৈরি করে এই সমস্যার সমাধান খোঁজা হবে।

ত্রিপুরা সরকার এবং হোটেল এসোসিয়েশন একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে সমস্যাগুলি দূর করার প্রচেষ্টা চালাবে। এর মধ্যে প্রধান বিষয় হল সঠিক নথিপত্র যাচাই এবং পর্যটকদের জন্য সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করা।

পর্যটকদের জন্য বার্তা
হোটেল এসোসিয়েশন বাংলাদেশের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, “আমরা এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক সময়ের জন্য আরোপ করেছি। আমাদের লক্ষ্য হলো, ভবিষ্যতে আরও ভালো পরিষেবা প্রদান করা। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের পর্যটকরা নিয়মাবলী মেনে চলবেন এবং আমাদের সহযোগিতা করবেন।”

সীমান্তবর্তী সম্পর্কের প্রভাব
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত একটি বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে। দুই দেশের মানুষদের মধ্যে সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক যোগাযোগের ভিত্তি দীর্ঘদিনের।

এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে উভয় দেশের প্রশাসনের মধ্যে আলোচনা হওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হয়, তবে এটি উভয় দেশের পর্যটন এবং ব্যবসার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ত্রিপুরার হোটেল পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। তবে, আশা করা হচ্ছে, ত্রিপুরা সরকার এবং হোটেল মালিকরা একসঙ্গে কাজ করে এই সমস্যার সমাধান করবেন এবং দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। সূত্র: কলকাতা ২৪

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন