কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক শনিবার থেকেই : হোয়াইট হাউজ

  01-02-2025 01:21PM


পিএনএস ডেস্ক: হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ শনিবারই মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ করে এবং চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।

যদিও ট্রাম্প শুক্রবার বলেছিলেন, কানাডার তেলের ওপর ১০ শতাংশের কম শুল্ক আরোপ করা হবে, যা ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

একইসাথে তিনি বলেছিলেন যে ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন তিনি। কারণ সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভালো আচরণ করেনি।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিয়াভিট বলেছেন, অবৈধ ফেন্টালিন (এক ধরনের মাদক) যুক্তরাষ্ট্রে বাজারজাতকরণের জবাবে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এটি (ফেন্টালিন) লাখ লাখ আমেরিকানকে হত্যা করেছে।

ট্রাম্প অবশ্য বারবার বলে আসছেন যে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য ঘাটতি এবং বিপুল অবৈধ অভিবাসীর বিষয়টিকে সামাল দেয়ার জন্য এমন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

শুক্রবার হোয়াইট হাউজে ব্রিফিংয়ে মিস লিয়াভিট বলেন, এগুলো প্রেসিডেন্টের অঙ্গীকার এবং তিনি অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করলেন।

নির্বাচনি প্রচারণার সময় ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের হুমকি দিয়েছিলেন। তবে হোয়াইট হাউজে ফেরার প্রথম দিনে এ সম্পর্কিত কোনো পদক্ষেপ তিনি নেননি। এর পরিবর্তে তিনি ইস্যুটি পর্যালোচনার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ২০১৮ সাল থেকে প্রায় একই রকম।

চলতি মাসের শুরুতে চীনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করেই ট্রাম্পের সুরক্ষাবাদের বিষয়ে সতর্ক করে একটি বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকির কথা উল্লেখ করেছেন।

সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েশিয়াং বলেছেন, তার দেশ বাণিজ্য উত্তেজনা কমাতে ও আমদানি বাড়াতে একটি ‘উইন উইন’ পরিস্থিতি খুঁজছে।

চীন, কানাডা ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার। দেশটি ৪০ শতাংশ পণ্য এসব দেশ থেকে আমদানি করে থাকে। এখন শুল্ক বাড়ানোর পদক্ষেপ এসব দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধের সূচনা করতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও পণ্যের দাম বাড়াতে পারে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শুক্রবার বলেছেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) যদি আরো অগ্রসর হন, আমরাও পদক্ষেপ নেব।’

কানাডা ও মেক্সিকো ইতোমধ্যেই বলেছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। একইসাথে দেশ দু’টি সীমান্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়েও পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে ওয়াশিংটনকে আশ্বস্ত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র যদি কানাডা ও মেক্সিকো থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে কর আরোপ করে, তাহলে সেটি জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনার জন্য ট্রাম্প যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেটি ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

শুল্ক হলো বিদেশে উৎপাদিত হয় এমন পণ্যের আমদানি কর। তত্ত্বগতভাবে বিদেশ থেকে আসা পণ্যে শুল্ক আরোপ করলে সেগুলোর দাম বাড়ে ও মানুষ সেগুলো কম ক্রয় করে। এর লক্ষ্য হলো মানুষ তখন সস্তায় দেশী পণ্য কিনবে এবং তা দেশের অর্থনীতিতে গতিশীল করবে।

তবে আমদানি করা জ্বালানির ওপর শুল্ক আরোপ করলে তা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের ওপর গিয়ে পড়তে পারে, যার ফলে সব ধরনের জিনিসের দাম বেড়ে যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৪০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে এবং এর বড় অংশই আসে কানাডা থেকে।

কানাডা ও ইংল্যান্ড এর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান মার্ক কার্নে বলেছেন, নতুন এই শুল্ক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আঘাত করবে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দেবে।

তিনি বলেন, ‘সারাবিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে যাচ্ছে।

কার্নে কানাডার লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌঁড়ে আছেন। সূত্র : বিবিসি


পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন