ক্যান্সারের নতুন টিকা আবিস্কার করলেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা

  31-01-2025 06:09PM

পিএনএস ডেস্ক: নতুন ভ্যাকসিনটির কাজ হবে গোড়াতেই নিওঅ্যান্টিজেনকে খুঁজে বার করে তাকে ধ্বংস করা। অথবা শরীরেরই রোগ প্রতিরোধী টি-কোষগুলিকে এমন ভাবে সক্রিয় করে তোলা, যাতে ক্যানসারের প্রোটিন তৈরিই না হতে পারে। সারার দাবি, নতুন ভ্যাকসিনটি সঠিক ডোজ়ে দিতে পারলে অন্তত ২০ বছরের মধ্যে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না।

ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন রকম গবেষণা চলছে। বর্তমানে ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ কয়েক প্রকার ভ্যাকসিনও চলে এসেছে বাজারে, যেমন হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের প্রতিষেধক যা জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে এবং হেপাটাইটিস বি টিকা যা লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।

তবে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা আরও এক প্রকার ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছেন, যেটি সব রকম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারবে বলেই দাবি। ব্রিটেনের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা গ্ল্যাক্সো স্মিথক্লাইন ফার্মাসিউটিক্যালস্ (জিএসকে) এবং অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা যৌথ ভাবে ভ্যাকসিনটি তৈরি করছেন বলে খবর।

অক্সফোর্ডের গবেষক সারা ব্ল্যাগডেন জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটির কাজ হল নিওঅ্যান্টিজেনগুলিকে খুঁজে বার করে নষ্ট করা। নিওঅ্যান্টিজেন এমন এক ধরনের প্রোটিন, যা ক্যান্সার কোষেই জন্মায়। শরীরের যেখানে কোষের অনিয়মিত বিভাজন শুরু হয়ে টিউমার তৈরি হতে থাকবে, সেখানেই নিওঅ্যান্টিজেন নামে প্রোটিনটি তৈরি হবে। এই প্রোটিনের সংখ্যা যেখানে বেশি, সেখানেই ক্যানসার কোষ তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও বেশি। ক্যান্সার প্রতিরোধক ওষুধগুলিও এই প্রোটিনটিকেই খুঁজে বার করে নষ্ট করার চেষ্টা করে। তবে এই প্রোটিন এক বার তৈরি হতে শুরু করলে, তাকে থামানো খুব কঠিন। সে জন্যই ক্যানসার কোষ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং আশপাশের সুস্থ কোষগুলিরও ক্ষতি করতে থাকে।

নতুন ভ্যাকসিনটির কাজ হবে গোড়াতেই নিওঅ্যান্টিজেনকে খুঁজে বার করে তাকে ধ্বংস করা। অথবা শরীরেরই রোগ প্রতিরোধী টি-কোষগুলিকে এমন ভাবে সক্রিয় করে তোলা, যাতে ক্যানসারের প্রোটিন তৈরিই না হতে পারে। সারার দাবি, নতুন ভ্যাকসিনটি সঠিক ডোজ়ে দিতে পারলে অন্তত ২০ বছরের মধ্যে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না।

ভ্যাকসিনটির ‘ট্রায়াল’ মানুষের শরীরে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জিএসকে-র মুখ্য বিজ্ঞানবিষয়ক আধিকারিক টনি উড। তিনি জানান, বছরে প্রতিষেধকটির ৫ কোটি ডোজ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। মানুষের শরীরে ট্রায়ালের ফলাফল যদি আশানুরূপ হয় ও প্রতিষেধকটি প্রয়োগের অনুমতি পাওয়া যায়, তা হলে ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে।

প্রতিষেধক দেওয়ার বয়ঃসীমা রয়েছে। ৯ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন নিলে সবচেয়ে ভাল হয়। টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পরে যদি অ্যালার্জি হয় বা কোনও গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে তা আর নেওয়া যাবে না। তবে নতুন ভ্যাকসিনটির তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না বলেই দাবি বিজ্ঞানীদের।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন