শহিদ ইয়ামিনের লাশ উত্তোলন করতে দেয়নি পরিবার

  04-02-2025 09:41PM

পিএনএস ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সাভারে নিহত শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনের লাশ উত্তোলনে সম্মতি দেননি তার পরিবারের সদস্যরা। আদালতের নির্দেশে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানা–পুলিশ মঙ্গলবার কবর থেকে লাশ তুলতে এলেও পরিবারের সদস্যদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ উত্তোলনের কার্যক্রম আপতত স্থগিত রাখেন তারা।

গত বছর ১৮ জুলাই সাভারে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন শহিদ হন। ওই সময় পুলিশের একটি সাঁজোয়া যানের ওপর থেকে তাকে টেনে নিচে ফেলে দেওয়ার ভিডিও তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ইয়ামিন রাজধানীর মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। থাকতেন এমআইএসটির ওসমানী হলে। বাসা সাভারের ব্যাংক টাউন আবাসিক এলাকায়।

ইয়ামিন হত্যা মামলায় আদালতের নির্দেশনা অনুসারে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হাসানসহ পুলিশ সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় আসেন। পরে তারা ইয়ামিন হত্যার মামলার বাদী ইয়ামিনের মামা মো. আব্দুল্লাহ আল মুনকাদিরকে নিয়ে ওই এলাকার কবরস্থানে গিয়ে ইয়ামিনের কবর শনাক্ত করেন। তখন মামলার বাদী কবর থেকে লাশ উত্তোলনে অসম্মতি দেন।

এরপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী হাসানসহ অন্যরা একই এলাকায় ইয়ামিনদের বাসায় গিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তারাও লাশ উত্তোলনে অসম্মতি জানান। পরিবারের সদস্য ও বাদীর সম্মতি না পাওয়ায় বেলা আড়াইটার দিকে ফিরে যান তারা।

মো. আব্দুল্লাহ আল মুনকাদির বলেন, ইয়ামিনকে শহিদের মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। ইয়ামিনের মা–বাবা কেউ চান না লাশ উত্তোলন করা হোক। তাই পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ উত্তোলন না করার জন্য আবেদন করেছেন। তাদের কাছে ইয়ামিনকে হত্যার ভিডিও ফুটেজ, ছবিসহ সব প্রমাণ রয়েছে। এগুলো দিয়েই ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব। এসব বিষয় জানিয়ে লাশ উত্তোলন না করার জন্য পরিবারের সবার পক্ষ থেকে তিনি আদালতের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন।

আব্দুল্লাহ আল মুনকাদির বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও ঢাকার নিম্ন আদালতে ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছেন। মামলায় হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট যারা ছিলেন, তাদের আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ওই সময়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অনেকে রয়েছেন।

ঢাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হাসান বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুসারে শহিদ ইয়ামিনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে শহিদ ইয়ামিনের মা–বাবা ও মামলার বাদী কবর থেকে লাশ উত্তোলন করতে ইচ্ছুক নন। এ বিষয়ে তারা একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন। আবেদনে তারা ইয়ামিন শহিদের মর্যাদা পেয়েছেন জানিয়ে লাশ উত্তোলনে আপত্তির বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ইয়ামিনের পরিবারের আবেদনের বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কবর থেকে লাশ উত্তোলনের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন