নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বাকবিতণ্ডার পর জেলেনস্কির পাশে দাঁড়াচ্ছেন ইউরাপীয় নেতারা। নজিরবিহীন এমন ঘটনার পর তারা তার সহায়তায় একজোট হচ্ছেন। সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে নির্ভরতা কমানোর ইঙ্গিতও দিচ্ছেন তারা।
জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের ঝগড়ার পর তাদের দুজনের সঙ্গেই আলাদাভাবে কথা বলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। এরপর তার মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, প্রধানমন্ত্রী স্টারমার ইউক্রেনের ভৌগলিক অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার ওপর ভিত্তি করে স্থায়ী শান্তি চুক্তি চান। এছাড়া তিনি ইউক্রেনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রতি দিয়েছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার পরই ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন জেলেনস্কি। এপর ম্যাক্রোঁ বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “এখানে আগ্রাসনকারী হলো রাশিয়া। আর হামলার শিকার হলো ইউক্রেন।”
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, “ইউক্রেনীয়দের চেয়ে বেশি শান্তি অন্য কেউ চায় না। আমরা শুধুমাত্র স্থায়ী শান্তির ওপর কাজ করছি। ইউক্রেনকে আশ্বস্ত করে বলছি, তারা জার্মানি এবং ইউরোপের ওপর নির্ভর করতে পারে।”
ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে কড়া ভাষায় বিবৃতি দিয়েছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কাজা কালাস। তিনি ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “এটি পরিষ্কার মুক্ত বিশ্বের নতুন একজন নেতা প্রয়োজন।” এছাড়া জেলেনস্কিকে ‘শক্ত’ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
ট্রাম্পের সঙ্গে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুট্টের সঙ্গেও কথা বলেন জেলেনস্কি। তিনিও ইউক্রেনের পাশে থাকার প্রতিশ্রতি দিয়েছেন।
লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট জিতানাস নওসেদা এক বিবৃতিতে বলেন, “ইউক্রেন, আপনারা কখনো একা হাঁটবেন না।” তিনি সতর্কতা দিয়ে বলেন, “যদি ইউক্রেন লড়াই বন্ধ করে দেয়, তাহলে ইউক্রেন বলতে কিছু আর থাকবে না।”
এছাড়া কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের নেতারাও জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়েছেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, তার দেশ ইউক্রেনের পাশেই থাকবে। তিনি বলেন, “রাশিয়া অবৈধভাবে এবং অকারণে ইউক্রেনে হামলা চালায়। গত তিন বছর ধরে ইউক্রেনীয়রা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভৌগলিক অখণ্ডতার জন্য সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করছে। যা আমাদের সবার জন্য মূল্যবান।”
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিস জানিয়েছেন, ইউক্রেনের যতদিন সহায়তা প্রয়োজন হবে ততদিনই তাদের পাশে থাকবেন তারা। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন বলেছেন, “যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে সেটি থেকে রক্ষা পেতে ইউক্রেনীয়দের লড়াইয়ের প্রতি আমাদের দৃঢ় সমর্থন অব্যাহত থাকবে।”
তবে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। তিনি ট্রাম্পের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, “শক্তিশালী ব্যক্তি শান্তি আনে। দুর্বল ব্যক্তি যুদ্ধ বাধায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ শান্তির পক্ষে সাহসিকতার সঙ্গে দাঁড়িয়েছেন। যদিও অনেকের জন্য এটি হজম করা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ।”
সূত্র: সিএনএন
এসএস
ট্রাম্প-জেলেনস্কি দ্বন্ধ, ইউক্রেনের পাশে ইউরাপীয় নেতারা
01-03-2025 05:57PM
