রাত পর্যন্ত চলবে অবরোধ, বললেন আন্দোলনকারীরা

  07-07-2024 06:39PM

পিএনএস ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহালসহ চার দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকার শাহবাগ, নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব মোড়, পরিবাগ, চানখারপুল মোড় অবরোধ করেছে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা।

রোববার (৭ জুলাই) বিকেল ৩টার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় আন্দোলনের সমম্বয়কারীরা বলছেন, রাত পর্যন্ত তারা বিভিন্ন পয়েন্ট অবরোধ করে রাখবেন।

এর আগে, শনিবার (৬ জুলাই) কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আজ বিকেল ৩টায় সারাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের বিভিন্ন প্রতিবাদী গান ও কবিতা আবৃত্তি করতে দেখা যায়। এ ছাড়া পরীবাগ মোড়ে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার চেয়ে নানা স্লোগান দিচ্ছেন।

এ সময় আন্দোলনের এক সমন্বয়ক সারজিস আলম গণমাধ্যমকে বলেন, রাত ৮-৯টা সড়ক অবরোধের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

আরেক সমম্বয়ক রিফাত রশীদ বলেন, আমরা কোনো পরবর্তী কর্মসূচির কথা ভাবছি না। আমরা চাই আজ চূড়ান্ত ফল নিয়ে ফিরে যেতে। রাত পর্যন্ত অবরোধ চলবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হল, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল ও অমর একুশে হল এবং বোরহান উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ও বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর চানখারপুল মোড় অবরোধ করেছেন।

এ ছাড়া ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব মোড় ও নীলক্ষেত মোড় অবরোধ রেখেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।

ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন তখনকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

২০২১ সালে সেই পরিপত্রের ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে’র অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে নাকি বাতিল হবে সে ব্যাপারে আপিল বিভাগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

পরে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন। এর প্রতিবাদে গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন