মুন্নী সাহা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

  02-01-2025 04:04PM

পিএনএস ডেস্ক: সাংবাদিক ও টেলিভিশন উপস্থাপক মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাবে ১৩৪ কোটি টাকার সন্দেহভাজন লেনদেনসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালানোর পর পর মুন্নী সাহার আমানতের মধ্যে ১২০ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। স্থগিত করা হিসাবে এখন স্থিতি আছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা। ১৭টি ব্যাংকের মাধ্যমে এ লেনদেন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে। বিধিবহির্ভূত লেনদেনের অভিযোগে মুন্নী সাহার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইতোমধ্যে জব্দ করেছে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের কারওয়ানবাজার শাখায় মুন্নী সাহার স্বামী কবির হোসেনের মালিকানাধীন এমএস প্রমোশনের নামে ২০১৭ সালের ২ মে একটি হিসাব খোলা হয়। যেখানে নমিনি হিসেবে নাম রয়েছে মুন্নী সাহার। অন্যদিকে, ব্যাংকটির চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখায় জনৈক মাহফুজুল হকের মালিকানায় প্রাইম ট্রেডার্সের নামে ২০০৪ সালের ২১ জুলাই একটি হিসাব খোলা হয়। দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকটি থেকে ৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণ নেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধ না করে বারবার সুদ মওকুফ ও নবায়ন করেছে ব্যাংকটি। এর মধ্যে কেবল ২০১৭ সালেই সুদ মওকুফ করা হয় ২৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার। যদিও প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে পারস্পরিক ব্যবসায়ীক কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ বিভিন্ন তারিখে হিসাব দুটির মধ্যে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে।

২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের একটি উদাহরণ তুলে ধরে বলা হয়েছে– ওই দিন আলাদা তিনটি চেকের মাধ্যমে এমএস প্রমোশনের হিসাব থেকে প্রাইম ট্রেডার্সের হিসাবে ৫৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা স্থানান্তর করা হয়, যা সন্দেহজনক। এই অর্থ পাচার হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে বিএফআইইউ।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ৬ অক্টোবর বিএফআইইউ মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাব তলব করে। ব্যাংক হিসাবের বাইরে গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোড এলাকায় শান্তিনিকেতনে ১৬৫, রোজাগ্রীণে তার একটি ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান মিলেছে।

ভোরের কাগজ দিয়ে মুন্নী সাহার সাংবাদিকতা শুরু। সেখান থেকে তিনি যান একুশে টেলিভিশনে। এরপর যোগ দেন এটিএন বাংলায়। মুন্নী সাহা বহু জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি টেলিভিশনের পর্দায় উপস্থাপন করেছেন। বিশেষ করে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশের ব্যাপারে তার ব্যাপক ভূমিকা ছিল।

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার (১৭) নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। গত ২২ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় ওই মামলা করেন নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মো. কামরুল ইসলাম। সেই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ একাধিক মন্ত্রী-এমপি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সদস্য এবং পুলিশ ও র‍্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে যে ৭ সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন মুন্নী সাহা।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন