জমে উঠেছে গরম কাপড় বেচাকেনা, দামও চড়া

  04-01-2025 07:30PM

পিএনএস ডেস্ক: চলতি বছরের প্রথমদিন থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের কারণে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। এ অবস্থায় জমে উঠেছে গরম কাপড়ের ব্যবসা। ক্রেতা সমাগম বেড়েছে মার্কেট, শপিংমল ও ফটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে।

বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ গরম কাপড় খুঁজতে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ভিড় করছেন। ডিসেম্বর মাসে হালকা শীতে ফুটপাতের দোকানগুলো তেমন ক্রেতা না পেলেও এখন বেচাকেনা জমে উঠেছে। এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, এ বছর বিক্রেতারা বেশি দাম চাচ্ছেন।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন সড়কের ফুটপাতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

এদিন দুপুরে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর, মিরপুর-১৩, ১৪, ১ ও ২ নম্বর প্রধান সড়ক সংলগ্ন ফুটপাতে হরেক রকম শীতের পোশাক নিয়ে হকারদের বসতে দেখা যায়। বিক্রেতারা জানান, সন্ধ্যার পরে জমে ওঠে বেচাকেনা। শীতের তীব্রতা বাড়ায় বেচাকেনাও বেড়েছে। ছোটদের জ্যাকেট, সোয়েটার, হাত মোজা, পা মোজা, টুপি ছাড়াও ছেলে ও মেয়েদের জ্যাকেট, সোয়েটার, ডেনিম জ্যাকেট, মাফলারসহ হরেক রকম গরম কাপড়ের সমাহার নিয়ে ফুটপাতে বসতে দেখা যায় বিক্রেতাদের।

এসব দোকানে মানভেদে ছোটদের জ্যাকেট ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা, সোয়েটার ২০০ থেকে ৬০০ টাকা, মোজা ৪০ থেকে ১০০ টাকা, টুপি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। ছেলে ও মেয়েদের প্যাডেড জ্যাকেট ৭০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, ক্রপ জ্যাকেট ৭০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, হুডি ৪০০ থেকে ১ হাজার টাকা, ব্লেজার ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা, সোয়োটার ৩০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এছাড়া মোটা কাপড়ের প্যান্ট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়।

এসব দোকান ঘুরে দেখা যায়, নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরাও শীতের কাপড় কিনতে ফুটপাতের দোকানে ভিড় করছেন। এসব দোকানে জ্যাকেট ও সোয়োটারের চাহিদা বেশি। তবে এবার গরম কাপড়ের দাম একটু বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

মিরপুর-২ নম্বরে শপিং কমপ্লেক্সের সামনের ফুটপাতে টুপি ও জ্যাকেট কিনতে দেখা যায় হামিদুল ইসলামকে। পূরবী থেকে আসা হামিদুল বলেন, ‘শিশুদের জ্যাকেটের দাম চাইছে ৪৫০ টাকা। এর নিচে বিক্রি করবে না। ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা এখন একদামে বিক্রি করেন। একটাকাও কমান না।’

বিক্রেতা হাসান মিয়া বলেন, ‘ছোট বাচ্চার জ্যাকেটে লাভ হবে মাত্র ২০ টাকা। ১০ পিস নিলেও ৪৫০ টাকা দিয়ে নিতে হবে। শো-রুমে গিয়ে দেখেন, ১ হাজার ৫০০ টাকার নিচে বাচ্চাদের কোনো জ্যাকেট নেই। একই পণ্য কিন্তু সেখানে কোনো বারগেইন (দামাদামি ) না করেই কিনতেছে। এ বছর সব পণ্যেরই দাম বেশি। আমরাও বেশি দাম দিয়ে কিনে আনছি।’

ফায়ার সার্ভিসের বিপরীত পাশের রাস্তার ফুটপাতে একাধিক ব্যক্তি জ্যাকেট বিক্রি করছেন। প্যাডেড, প্যারাসুট কাপড় ও রেক্সিনের জ্যাকেট। এই ফুটপাতের ক্রেতারা জানান, জ্যাকেটের দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি বলছেন বিক্রেতারা। শীত বেড়ে যাওয়ায় দামও ছাড়ছেন না তারা। গার্মেন্টসকর্মী শহিদুল বলেন, ‘১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকার নিচে কোনো জ্যাকেট নেই। দাম বেশি, তাই ভাবছি সোয়েটার কিনে নেবো।’

মিরপুর-১৩ ও ১৪ নম্বর সংলগ্ন ফুটপাত ও হোপ স্কুলের গলিতে গরম কাপড় ছাড়াও গৃহস্থালির অন্যান্য পণ্য, কসমেটিকস, ঘর সাজানোর পণ্যও পাওয়া যায়। তবে মেয়েদের জ্যাকেট, লং জ্যাকেট, সোয়েটার, ফুল হাতা টি শার্টের বিক্রি বেশি বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

সাহারা নামের একজন নারী বিক্রেতাকে দেখা যায় মেয়েদের টি শার্ট বিক্রি করতে। তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যার পর দম ফালানোর সুযোগ থাকে না। ফুটপাতে দাঁড়ানোর অবস্থা থাকে না। এজন্য আমরা একদামেই পণ্য বিক্রি করি। এখন বিক্রি ভালো হচ্ছে। আশা করছি গরম কাপড়ের বিক্রি আরও কয়েকদিন ভালো হবে।’

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন