পিএনএস ডেস্ক: ছয়টি সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনসহ ৩৪টি রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে এসব সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোকে তাদের মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই মতামত পাওয়ার পর সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন ঐকমত্য কমিশন। পরবর্তীতে ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হবে একটি জাতীয় সনদ।
সোমবার (১০ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, যখন যে দলের মতামত পাওয়া যাবে, সে সময় থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। আশা করছি, ১৩ মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত জানাবে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন থাকলে তারা কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। কমিশন এ বিষয়ে সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, ১৬৬ সুপারিশের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার সংক্রান্ত ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন সংক্রান্ত ২৬টি ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ ৩৪টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সংস্কার কমিশন মনে করে, তাদের সুপারিশগুলো প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। প্রথমটি হলো সংশ্লিষ্ট সুপারিশের বিষয়ে একমত কি না। এতে তিনটি বিকল্প রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো- ‘একমত’, ‘একমত নই’ এবং ‘আংশিকভাবে একমত’। এ তিনটি বিকল্পের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় নিয়েও মতামত চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি।
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে ছয়টি বিকল্প আছে। সেগুলো হলো ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে’, ‘গণপরিষদের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে’ এবং ‘গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে’। এসব ঘরের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি সুপারিশের পাশে দলগুলোর ‘মন্তব্য’ দেয়ার একটি জায়গাও রাখা হয়েছে।
এছাড়া, নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. আলী রীয়াজ বলেন, আগামী নির্বাচনের বিবেচনার চেয়ে রাষ্ট্র সংস্কার জরুরি। তবে, রাষ্ট্র সংস্কারের সাথে নির্বাচনের কোনো বিভেদ কিংবা সম্পর্ক নেই।
এরপর গণপরিষদ নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি বলেন, গণপরিষদের মাধ্যমে নতুনভাবে সংবিধান সংস্কারের কথা অতীতেও হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব বলে বিশ্বাস করি। ভবিষ্যত নির্মাণের পথরেখা তৈরি করতে চায় ঐকমত্য কমিশন।
পিএনএস/আনোয়ার
১৬৬ সুপারিশ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনসহ ৩৪ দলকে ঐকমত্য কমিশনের চিঠি
10-03-2025 01:19PM
