ইসির অধীনে থাকবে না এনআইডি, দায়িত্ব পাবে স্বাধীন ডেটা অথরিটি

  12-03-2025 09:33PM

পিএনএস ডেস্ক: আপাতত জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে থাকলেও ভবিষ্যতে স্বাধীন ডেটা অথরিটির কাছেই যাবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

বুধবার (১২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি ভবনে ‘এনআইডির ওনারশিপ’ শীর্ষক এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, কমিশনের অধীনে ৩৫ বা তারও বেশী ধরনের তথ্য আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভোটের অধিকার ইমপ্লিমেন্টেশন করার জন্য ৩৫ ধরনের তথ্যের প্রয়োজন আছে কি? এই প্রশ্নটি যৌক্তিকভাবে এবং কারিগরি ভাবে উপস্থাপন হয়েছে। আমরা ডেটা অথরিটির কথা বলছি। আমরা বলছি না যে নির্বাচন কমিশনের যে আইটি সেল আছে সেটাকে বন্ধ করে দেব। তার যে সফটওয়্যার হার্ডওয়্যার এবং কারিগরি ক্ষমতা আছে সেটাকে আমরা নিয়ে নেব। আমরা বলছি ডাটা ডাটা অথরিটির মাধ্যমে রেগুলেটেড হবে যার কাছে যেটা আছে সেটা আপাতত সেখানেই থাকবে।

তিনি বলেন, সামনে একটা পর্যায়ে এসে যখন এই সফটওয়্যারগুলোকে রূপান্তর করা দরকার যখন এগুলো পুরোনো হবে। ওই সময় ওই সময় যেটাকে একটা কেন্দ্রীয় অথরিটির অধীনে নিয়ে আসবো।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি যে সংস্থাগুলো আছে সে সংস্থাগুলোকে আশ্বাস দিতে চাচ্ছি, যে ডেটা অথরিটি আগামী দিনে হবে এটা একটা ধারণার মধ্যে আছে। এ ধারণাটা বৈশ্বিক স্ট্যান্ডার্ড কে কমপ্লিমেন্ট করে। এই ধারণাটা দেওয়ার মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতের যাত্রা শুরু করলাম। এটার মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে যে আইটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার রয়েছে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে না। তাদের কারো চাকরিও যাবে না কোনো ক্ষতি হবে না। বরং প্রত্যেকটা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে। অন্য মন্ত্রণালয়ের যে ডেটা প্রাপ্তির অধিকার সেটা আরও সুরক্ষিত হবে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, আমরা চাই সবাই এই বৈশ্বিক স্ট্যান্ডার্ড টা মেনে নিক এবং এখানে যাতে কোনো ধরনের ভুল ধারণা তৈরি না হয়। আমরা নির্বাচন কমিশনের বিষয়টা সুস্পষ্টভাবে সামনে আনলাম। কারণ নির্বাচন কমিশন থেকে কয়েকটা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে যা এনআইডি সার্ভার নির্বাচন কমিশনের কাছে থেকে নিয়ে নেওয়া না হয়। আমরা বলতে চাচ্ছি যে, এখন নির্বাচন কমিশন যে ডাটা রক্ষাণাবেক্ষণ করে তারা সেটাই করবে। কিন্তু ধীরে ধীরে আমাদেরকে একটি স্বাধীন ডেটা অথরিটির দিকে যেতে হবে। যেটা কিনা আমাদের লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক, অথেন্টিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক, ডেটা এক্সটেন্ট ফ্রেমওয়ার্কের জন্য জরুরি যার উপর ভিত্তি করে আমাদের ডিজিটাল সুযোগগুলো দাঁড়িয়ে আছে।

তিনি বলেন, আইসিটি খাতকে যদি আমরা গার্মেন্টসের আদলে রপ্তানিমুখী খাত হিসেবে প্রতিস্থাপন করতে চাই এবং আমাদের সার্বিকভাবে অর্থনীতির বিকাশ করতে চাই তাহলে আমাদের এই যাত্রায় যেতেই হবে। আমাদের এখনই সে যাত্রাটা শুরু করা দরকার।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা কোনো মন্ত্রণালয় অধীনে যাবে না। এখনি যে সরিয়ে ফেলতে হবে সেটাও না, আমরা কার্যক্ষমতা আরও ভালো করতে চাচ্ছি।

এর আগে সকালে এনআইডি ইসির অধীন রাখার দাবিতে ‘স্ট্যাড ফর এনআইডি’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন। তিনি বলেন, বিগত সরকার এনআইডি প্রথমে সুরক্ষা সেবা বিভাগে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু সবাই চায় এটি ইসির অধীনে থাকুক। অন্তর্বর্তী সরকার উপদেষ্টা পরিষদে সিদ্ধান্ত নেয় এনআইডি স্বরাষ্ট্রে নেওয়ার আইন বাতিল করে তা ইসির অধীনেই ন্যস্ত করার। কিন্তু আরেকটি উদ্যোগ মাঝখানে নেওয়া হয়েছে, আলাদা কমিশন গঠন করে এনআইডি পরিচালনার জন্য। এজন্য গত ৫ মার্চ এনআইডি এখানেই রাখার দৃশ্যমান উদ্যোগ নিতে কমিশনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম, সরকার ও কমিশনের দৃশ্যমান উদ্যোগের জন্য। কমিশন একমত পোষণ করে ৯ তারিখে সরকারকে চিঠি দিয়েছে। কমিশনের কাছ থেকে সাড়া পেলেও সরকারের কোনো কিছু আমরা পায়নি।

তাই পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৩ মার্চ স্ট্যান্ড ফর এনআইডি কর্মসূচিতে (মানববন্ধন) যাবো। সারা দেশের নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত পালন করবো। এরমধ্যে কোনো সাড়া না পেলে পরবর্তীতে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন