জাকের-মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ২৯৫ রানের চ্যালেঞ্জ

  08-12-2024 11:51PM

পিএনএস ডেস্ক: ৬ উইকেটে ২৯৪ রান করে থামলো বাংলাদেশ। শেষ ওভারে ৪০ বলে ৪৮ রান করা জাকের না ফিরলে তিনশও হতে পারতো। জাকের-মাহমুদউল্লাহর ৭৪ বলে ৯৬ রানের জুটি বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং স্কোরের ভিত গড়ে দেয়। মাহমুদউল্লাহ ৪৪ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত ছিলেন। সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেন মিরাজ। ১০১ বলে এই রান করেন তিনি। এ ছাড়া ৬০ রান করেন তানজীদ। উইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন শেফার্ড।

৪৪ বলে জাকের-মাহমুদউল্লাহর জুটি ফিফটির দেখা পায়। তাতে জাকেরের অবদান ৩২ রান, আর মাহমুদউল্লাহর ১৯। দুজনে মেরে খেলার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ আড়াইশ রান পার করে ৪৪.৫ ওভারে।

১০১ বলে ৭৪ রান করে মিরাজের বিদায়, বাংলাদেশের দুইশ
১০১ বলে ৭৪ রান করে বিদায় নিলেন মিরাজ। জেডন সিলসলে লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। টাইমিংয়ে গড়বড়। বল উঠে যায় উপরের। এক্সট্রা কাভার অঞ্চলে ক্যাচ নেন রাদারফোর্ড। ৬টি চার ও ১টি ছয়ে ইনিংসটি সাজানো ছিল। শুরু থেকেই ধীরগতিতে এগোচ্ছিলেন মিরাজ, থিতু হওয়ার পর তার আউটে কিছুটা চাপে বাংলাদেশ। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী হলেন জাকের আলী। মিরাজের আউটের পর ৩৮.৫ ওভারে বাংলাদেশ দুইশ রান করে।

দারুণ ইনিংসের সম্ভাবনা দেখিয়ে আফিফের বিদায়
শেফার্ডের লেন্থ ডেলিভারিতে ব্যাট শাফল করে অনসাইডে খেলেন আফিফ। টাইমিংয়ে গড়বড়। বল চলে যায় ডিপ স্কয়ারলেগে দাঁড়ানো ফিল্ডার জেডেন সিলসের হাতে। আউট হওয়ার আগে ২৯ বলে ২৮ রান করেন এই ব্যাটার। লম্বা সময়ের পর জাতীয় দলে ফেরেন এই ক্রিকেটার, শুরু থেকে তাকে দেখাচ্ছিল সাবলীল, আত্মবিশ্বাসী। রানের খাতা খোলেন চারের মারে। ২৮ রানের এই ইনিংসে ১৬ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে। ক্রিজে মিরাজের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।

৭১ বলে মিরাজের ফিফটি, দেড়শ পেরোলো বাংলাদেশ
শেফার্ডের শর্ট ডেলিভারিতে পুল করে দৌড় দেন মিরাজ। ১ রানের সঙ্গেদেখা পান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটির। ৭১ বলে ৪টি চার ও ১টি ছয়ের মারে ফিফটিকে সাজান বাংলাদেশ অধিনায়ক। এর আগে আফগানিস্তান সিরিজেরশেষ ম্যাচেও ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন মিরাজ। তানজীদের বিদায়ের পর আফিফের সঙ্গে জুটি গড়ে এগোচ্ছেন তিনি। দুজনের জুটি থেকে এখন পর্যন্ত আসে ৪৫ রান।

৬০ রানে তানজীদের বিদায়
আলঝারির আউটসাইড অফের বলে কাট করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন তানজীদ। বল চলে যায় সরাসরি শর্ট থার্ড অঞ্চ লে দাঁড়ানো ফিল্ডার রোস্টন চেজের হাতে। ৬০ বলে ৬০ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে সাজানো ছিল ইনিংসটি। এর আগে ফিফটি করেন ৪৬ বলে। তার আউটে ভাঙে মিরাজের সঙ্গে গড়া ৭৯ রানের জুটি। ক্রিজে মিরাজের সঙ্গী আফিফ।

৪৬ বলে তানজীদের ফিফটি, দলের সেঞ্চুরি
শেফার্ডকে লং অফে উড়িয়ে মেরে বল বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলেন তানজীদ। এক লাফে ৪২ থেকে ৪৮ রানে যান এই বাঁহাতি ব্যাটার। সঙ্গে ৫৭ বলে হয় তানজীদ-মিরাজ জুটির ফিফটি। জুটির ফিফটির পর মাত্র ৪৬ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন এই ওপেনার। এই ফিফটি ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো ছিল। দুজনের জুটিতে ভর করে বাংলাদেশ দলীয় শতক পূর্ণ করে ১৮ ওভারে।

লিটনের ২ রান, মিরাজের জীবন
২ রানের বেশি কর্যেে পারেননি লিটন দাস। তিনে ব্যাটিং করতে এসে ফেরেন দ্রুত। শেফার্ডের ব্যাক অব লেন্থের বল পিচ করে মুভ করে হালকা, সঙ্গে ছিল এক্সট্রা বাউন্স। খোঁচা দেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৪৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লিটনের পর ক্রিজে এসে এক বল পরেই মিরাজ এলবিডব্লিউর শিকার হন। রিভিউ নিলে দেখা যায় বল উইকেট মিস করেছে। বেঁচে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক। তানজীদ-মিরাজে বাংলাদেশ ফিফটি পার করে ৯বম ওভারে। প্রথম পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫৮ রান।

দারুন শুরুর পর সাজঘরে সৌম্য
তানজীদ-সৌম্যর ব্যাটে শুরুটা দারুণই হয়েছিল বাংলাদেশের। ছয়ের বেশি করে তুলছিলেন রান। আলঝারির করা পঞ্চম ওভারে এক বল গ্যাপে সৌম্য দুই চারে রানের চাকা আরও গতিশীল করেন। তবে এরপর বেশিদূর যেতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটার। আউটসাইড অফের বল মুভমেন্ট পেয়েছিল। তাতেই পরাস্ত সদ্য গ্লোবাল সুপার লিগে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়া সৌম্য। খোঁচা লেগে বল যায় উইকেটের পেছনে। ১৮ বলে ১৯ রান করেন এই ব্যাটার। বাংলাদেশ ৩৪ রানে প্রথম উইকেট হারায়। ক্রিজে তানজীদের সঙ্গী লিটন।

একাদশে তিন পেসার, ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
সেন্ট কিটসে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেনে বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। প্রায় এক বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামছেন আফিফ হোসেন। বাংলাদেশ সময় খেলাটি শুরু হবে রোববার রাত সাড়ে ৭টায়।

বাংলাদেশ একাদশ
তানজিদ হাসান, সোম্য সরকার, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক) আফিফ হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), জাকের আলী, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা।

উইন্ডিজ একাদশ
ব্র্যান্ডন কিং, এভিন লুইস, কেসি কার্টি, শাই হোপ (অধিনায়ক), শেরফেন রাদারফোর্ড, জাস্টিন গ্রিভস, রোস্টন চেজ, রোমারিও শেফার্ড, গুদাকেশ মতি, আলজারি জোসেফ ও জেডেন সিলস।

চোখ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে
আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ভবিষ্যৎ কি তা এখনও অজানা। তবে বৈশ্বিক এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে তা নিশ্চিত। ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দের কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ভবিষ্যৎ চূড়ান্ত না হলেও অংশগ্রহণকারী দলগুলোর প্রস্তুতি কিন্তু থেমে নেই। এই যেমন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশগ্রহণের আগে বাংলাদেশ নিজেদের শেষ প্রস্তুতির মঞ্চ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ।

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স
দুই দলের টেস্ট সিরিজ অমীমাংসিত থেকেছে। ওয়ানডে সিরিজ প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ হবে তা অনুমেয়। দুই দলই নিজেদের সবশেষ ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়ান দ্বীপপুঞ্জে সফরের আগে বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের কাছে একই ব্যবধানে সিরিজ খুইয়েছে।

পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পক্ষে
দুই দলই ঘুরে দাঁড়াতে তীব্র লড়াই করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দুই দলের অতীত পরিসংখ্যান এই সিরিজে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখবে। সবশেষ ১১ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ একবারও হারাতে পারেনি বাংলাদেশকে। এর মধ্যে ২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতেই হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। এর আগে দেশের মাটিতেও তাদেরকে নাস্তানাবুদ করেছে বাংলাদেশ। হারিয়েছে বিশ্বকাপ মঞ্চে এবং আয়ারল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে। বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সবশেষ ওয়ানডে হেরেছে ছয় বছর আগে, ২০১৮ সালে। এরপর থেকে একচ্ছত্র আধিপত্য চলছে। এবার বাংলাদেশ কেমন করবে সেটা বিরাট প্রশ্নের।

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন