রাকিবের আক্ষেপ, শিরিনের চার স্বর্ণ জয়

  19-02-2025 08:56PM

পিএনএস ডেস্ক: অ্যাথলেটিক্সে অন্য সব ইভেন্টের চেয়ে ১০০ মিটার একটু বাড়তি গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষণীয়। সেটা আবার স্মরণ করালেন জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে ২০০ মিটারে প্রথম হওয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর স্প্রিন্টার রাকিবুল হাসান।

২০০ মিটারে অন্যতম ফেভারিট বাংলাদেশ নৌবাহিনীরই জহির রায়হান। তাকে হারিয়ে একই সংস্থার রাকিবুল প্রথম হয়েছেন। তবে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দ্রুততম মানব ইসমাইলের চেয়ে মাত্র ০.০২ সেকেন্ড পিছিয়ে দ্বিতীয় হন তিনি। ২০০ মিটারে সেরা হয়েও দ্রুততম মানব না হওয়ার আক্ষেপ এখনও তাড়া করছে রাকিবকে, ‘২০০ মিটারে প্রথম হয়েছি ভালো লাগছে। তবে ১০০ মিটার তো ১০০ মিটারই। দ্রুততম মানব হওয়ার ইচ্ছে কোন স্প্রিন্টারের না থাকে! ১০০ মিটারে আমার নয়টি পদক আছে গত কয়েক বছরে। তিনবার ব্রোঞ্জ আর ছয়বার রৌপ্য।’

এবার ১০০ মিটারে স্বর্ণের খুব কাছাকাছি ছিলেন রাকিব। অল্পের জন্য দ্রুততম মানব হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। এজন্য খানিকটা নিজেকেও দায়ী করছেন এই স্প্রিন্টার, ‘আসলে ওই দিন (গত পরশু) বেশি চাপ নিয়েছিলাম। অতিরিক্ত চাপ নিলে আসলে হয় না। তাছাড়া সেদিন আমার ফিনিশিংয়ে একটু সমস্যাও হয়েছে। একেবারে শেষ মুহূর্তে না পড়ে যদি শেষ করতে পারতাম তাহলে হয়তো আমিই ফার্স্ট হতাম।’

৪৮তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ যেন শিরিনময়। দ্রুততম মানবী শিরিন গতকাল ১০০*৪ রিলেতে স্বর্ণ জিতেছিলেন। আজ স্বর্ণ জিতলেন আরও দুটি ইভেন্টে। ২০০ মিটারে শ্রেষ্ঠত্বের পাশাপাশি ৪০০*৪ রিলেতেও বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে শিরোপা এনে দিয়েছেন। গরমের মধ্যে ২০০ মিটার দৌড় শেষ করেই ট্র্যাকে পড়ে যান রাকিব। আধঘণ্টারও বেশি সময় শুশ্রুষার পর আবারও নামেন ট্র্যাকে। ৪০০*৪ রিলেতে শেষ অংশে দৌড়ে তার দল নৌবাহিনীর আরেকটি স্বর্ণ নিশ্চিতের পরপরই স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন।

নারীদের ৪০০*৪ মিটার রিলেতে এদিন ৩১ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। শিরিন, সাবিহা, নুসরাত ও নাথেরা খাতুনের টাইমিং হয়েছে ৩:৫১.৬২ সেকেন্ড। ১৯৯৩ সালে বিজেএমসির নাছিমা, সুবনা, মনিয়া ও সুমিতার টাইমিং ছিল ৩:৫৫.৫৫ সেকেন্ড। মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি ইভেন্ট খেলা অনেক কষ্টদায়ক। আবার অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে শিরিনের অসুস্থতার সময় দেখা যায়নি কোনো চিকিৎসককেও। এ নিয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলমের মন্তব্য, ‘আন্তর্জাতিক নিয়ম রয়েছে ৪৫ মিনিট পর আরেকটি ইভেন্ট আয়োজনের। সেখানে আমাদের ২০০ মিটারের পর ৪০০ মিটার রিলের সময় বেশি ছিল। আমাদের মেডিক্যাল টিম ছিল। তারা কেউ আহত বা অস্বস্তি বোধ করলে দেখাশোনা করছে।’

ডিসকাস থ্রো ও আজহারুল ইসলাম সমার্থক শব্দ। প্রায় তিন দশক তিনি জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। গত জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে তিনি অবশ্য শ্রেষ্ঠত্ব হারিয়ে রৌপ্য জিতেছিলেন। পঞ্চাশোর্ধ্ব এই অ্যাথলেট এবার ব্রোঞ্জ পেলেও ফলাফল প্রক্রিয়া নিয়ে রয়েছে আপত্তি, ‘যিনি প্রথম হয়েছেন তার নির্ধারিত শটটি ডিসকোয়ালিফাইড হয়েছিল, সেটা বৈধ ঘোষণা হওয়ায় প্রথম হয়েছে। অথচ ওটা নো হয়েছিল, এতে তিনি চতুর্থ হন। বাংলাদেশ আনসারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে আপত্তি দেওয়া হয়েছে।’

ডিসকাস থ্রোয়ের মতো আপত্তি রয়েছে ৩০০০ মিটারের দৌড়েও। বাংলাদেশ আর্মির প্রধান কোচ ফরিদ খান চৌধুরি বলেন, ‘দুটি ইভেন্ট নিয়ে আমরা আপত্তি জানিয়েছি আনুষ্ঠানিকভাবে।’ আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সকল ইভেন্টের পদক প্রদান করেছে ফেডারেশন। তবে এটি পর্যালোচনা করার কথা বলেছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক, ‘বেশ কয়েকটি আপত্তি পড়েছে। আমরা সেগুলো দেখব। সত্যতা ও প্রমাণ পেলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করব আমরা। এতে পদক প্রত্যাহার করা যাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে।’ ফলাফলের আপত্তির পাশাপাশি একটি ইভেন্টের ফরম্যাটেরও পরিবর্তন হয়েছে মাঝপথে। যা প্রতিযোগিতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনী ২১টি স্বর্ণ জিতে পদক তালিকায় শীর্ষে। দুটি স্বর্ণ কম নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বিতীয় স্থানে। তিনদিন ব্যাপী ৪৮তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে ৬টি রেকর্ড হয়েছে। রেকর্ড করা দুই খেলোয়াড় বর্ষা খাতুন ও নাজমুল সেরা পুরুষ ও নারী খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি এবং ফরিদ খান চৌধুরি সেরা কোচের স্বীকৃতি পেয়েছেন যথাক্রমে অ্যাথলেট ও জাজেস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন