দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ সড়কে ধীরগতির ব্যাটারিচালিত গাড়ি

  13-08-2018 02:02PM


পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : প্রশাসনিক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করায় সড়কগুলোয় দিনদিন বেড়েই চলেছে রেজিষ্ট্রেশন বিহীন এসব যানবাহনের চলাচল এবং সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়কে দুর্ঘটনা ও চাদাঁবাজী। সড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ব্যাটারী চালিত এসব ধীরগতির যানবাহন।

এসব অবৈধ যানের ব্যাটারী চার্জ দিতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ চুরি হলেও স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগেরও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। মনে করা হচ্ছে, বিদ্যুৎ বিভাগসহ প্রশাসনের সব মহলের সমন্বয়ের মাধ্যমেই এসব অবৈধ যানে শহর ভরে গেছে। সড়কগুলোয় ভয়াবহ যানজটের অন্যতম কারণই হচ্ছে ব্যাটারী চালিত এসব ধীরগতির রিক্সা, নসিমন-করিমন, ইজিবাইক, ভটভটি, টমটম।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক ও সড়কে চলাচল শুরুর পর থেকেই বিশেষ করে পেডেল চালিত রিক্সা ও ভ্যান গাড়ির যাত্রী সংখ্যা কমতে থাকে। আর চীন দেশ আমদানীকৃত চার্জার ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক, ভটভটি, রিকশা-ভ্যান নসিমন, করিমন, ভটভটি, থ্রি হুইলার অটোরিকশা, অটোটেম্পো অযান্ত্রিক চালু হওয়ায় দেশের সর্বত্র এসব অবৈধ যান দাফিয়ে বেড়াচ্ছে।

এসব যাবাহনকে দুর্ঘটনার আকর মনে করা হলেও অবাধে চলছে। সবকিছু ম্যানেজ করে করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। অভিজ্ঞ মহলে মতে, এ জন্য নেওয়া হচ্ছে দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক চাঁদা। চাঁদার বদৌলতে এগুলো সড়কে টিকে আছে।

আগের পেডেল চালিত ধীর গতির রিক্সা ও ভ্যান গাড়ীর চেয়ে ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ভ্যান গাড়ীর গতি বেশী হওয়ায় এবং এলাকায় হাতের কাছেই গড়ে ওঠা কারখানাগুলোয় নগদ ও কিস্তিতে কেনাবেচা হওয়ায় জেলার পেডেল চালিত রিক্সা ও ভ্যান গাড়ীর চালকরা তাদের আগে পেডেল চালিত রিক্সা ও ভ্যান ছেড়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ভ্যান গাড়ী কিনতে ঝুঁকছে।
আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কে ইজি-বাইকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিনদিন ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ভ্যান গাড়ীর চলাচল ভয়াবহ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেসঙ্গে এসব যানবাহন কেন্দ্রক গড়ে তোলা সংগঠন ও শাখার সংখ্যাও বাঙের ছাতার মতো ইতোমধ্যেই বিস্তার লাভ করেছে। আর এসব সংগঠন ও শাখার নাম ব্যবহার করে সড়ক গুলোর প্রায় অর্ধ-শত পয়েন্টে প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজী।

এ ব্যাপারে বেশ ক’জন ইজি-বাইক চালক প্রতিবেদককে বলেন, আমরা প্রথম যখন ইজি-বাইক রাস্তায় নামে, তখন থেকেই ইজি-বাইক সড়কে চালাচ্ছি। সম্প্রতি কয়েক মাসের ব্যবধানে সংগঠনের নামে প্রতিদিন চাঁদা তোলা হচ্ছে। প্রতিটি ইজি-বাইক চালকদের কাছ থেকে প্রতিদিন ১০ টাকা করে নেয়ার কথা শিকার করে বলেন, চাঁদা তোলার টাকাগুলো ইজি-বাইক অটো চার্জার চালকদের কল্যান ফান্ডে খরচ করা হবে বলেই তোলা হচ্ছে।

সচেতন মহল বলছেন, একে তো নম্বর বিহীন এসব যানবাহন, তার ওপর আবার ব্যস্ততম সড়কের ওপর চলন্ত গাড়ীগুলোকে দাঁড় করিয়ে টাকা নিতে গিয়ে মাঝে মাঝেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে যেকোনো সময় বড়-ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন তারা। তাদের মতে, প্রশাসন শুরুতেই এ পদক্ষেপ না নিলে আগামীতে সড়কগুলোয় অবৈধ যান ভটভটির মতো এ গাড়ীর বেপরোয়া চলাচল বেড়ে যাবে এবং বাড়বে সড়ক দুর্ঘটনা।

অধিকাংশ গাড়ীর ব্যাটারী অবৈধভাবে চার্জ করায় ব্যাপক বিদ্যুৎ সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ চুরি ও এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল এবং বিশেষ করে শহরে যানজট ঠেকানোর পাশাপাশি রাস্তায় গাড়ী থামিয়ে চাঁদা আদায় বন্ধে বিআরটিএসহ স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করে আসছে এলাকার সচেতন জনগোষ্ঠী। দুর্ঘটনা, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও সড়কে কাঙ্ক্ষিত শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সড়ক-মহাসড়কে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার সর্বত্র সড়কগুলোয় অদক্ষ চালক দ্বারা পরিচালিত ধীরগতির ভটভটি, ইজিবাইক, ভ্যাটারি চালিত রিকশা ও ভ্যান নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ গ্রহণ দরকার।

লেখক : বার্তা সম্পাদক- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন