পিএনএস : উলামায়ে দেওবন্দ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতি আব্দুল করিম বলেছেন, যুগ যুগ ধরে মুসলমানদের ঘরে ঘরে চলে আসা কুরবানীর ঐতিহ্যকে বন্ধের ষড়যন্ত্র যে কোন মুল্যে রুখে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে পাশ্ববর্তী দেশে মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্য কুরবানীর উপর যে অন্যায়-অযৌক্তিক বিধি নিষেধ আরোপ করে লক্ষ লক্ষ মুসলমানের কলিজ্বায় যে আঘাত করা হচ্ছে বাংলাদেশে মুসলমানদের ঘরে ঘরে কুরবানীর ঐতিহ্য বন্ধের অশুভ পায়তারা সে ষড়যন্ত্রের অংশ বিশেষ। তিনি বলেন, ভিনদেশী প্রভুদের খুশি করার জন্য এধরণের চক্রান্ত।
মুফতি আব্দুল করিম বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও কতিপয় পরিবেশবাদীদের এ সমস্ত অযৌক্তিক চিন্তাধারা উম্মাদনার শামিল। ১. কারণ আবহমানকাল থেকে মুসলমানদের ঘরে ঘরে কুরবানীর পশু জবাই হয়ে আসা কোন দেশ কিংবা সমাজ বা পরিবেশের ক্ষতির কথা কোন সুস্থ বিবেকবান মানুষ ভাবেনি বরং অনেকে কুরবানীর তাজা রক্ত হাতে কিংবা রোগে আক্রান্ত স্থানে রোগ আরোগের জন্য ব্যবহার করে আসছেন। যা নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় কুরবানী করা ব্যতীত নারী-পুরুষের অনেকের জন্যই ব্যবহার করা দুষ্কর। ২. অপরদিকে হাদীস শরীফে নিজ নিজহাতে নিজ পশু জবাই করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। সম্ভব না হলে কুরবানীর স্থলে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করতে বলা হয়েছে। যা মাঠে-ময়দানে করলে পর্দানশীন নারীসহ মাযুর বা দুর্বলদের জন্য সম্ভব হবে না। ৩. এভাবে মাঠে কুরবানী করলে প্রচলন হয়ে গেলে কুরবানীর জবাইকৃত গোস্ত বিতরণ ও খরচ বেড়ে যা অনেক মানুষ গোস্ত চামড়া ইত্যাদি বহন করার মত প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকার অজুহাতে কুরবানী করা থেকেই বিরত থাকবে। ফলে দেশে কুরবানীর হার কমে যাবে। ৫. একজন মুসলমান ওয়াজিব কুরবানীর সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে। ওয়াজিব তরককারী হিসেবে গুনাহগার সাব্যস্ত হবে।৬. বিভিন্ন টাউট বাটপার সন্ত্রাসীদের হাতে নিজ চামড়া ও কুরবানীর গোস্ত চলে যাবে। ফলে দেশের দরিদ্র মানুষ, এতিমখানা, প্রকৃত প্রাপকরা তাদের হক থেকে বঞ্চিত হবে।
মুফতি আব্দুল করিম আরও বলেন, ঢাকা শহরে বসবাসরত প্রতিটি সচেতন নাগরিক ভালভাবেই জানেন, কুরবানীর সময়ে নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় কুরবানী করেই নিজের গরুর চামড়া, সন্ত্রাসীদের কারণে হেফাজত করতে পারে না। বিগতদিনে দেখা গেছে বাড়ীর গেটের ভিতর থেকে পর্যন্ত এলাকার মাস্তান, ক্যাডাররা কুরবানীর পশুর চামড়া জোরপূর্ব টেনে হিচড়ে নিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় মালিকের ইজ্জত, সম্মান স্থানভেদে প্রাণের ভয়ে অসহায়ের মত দাড়িয়ে প্রত্যক্ষ করা ছাড়া কিছু করার থাকে না। তাই উপরোক্ত বিষয়গুলো উপলব্ধি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এই অপরিনামদর্শি সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
পিএনএস/মো.সাইফুল্লাহ/মানসুর
‘মুসলমানদের কুরবানী প্রথা বন্ধের ষড়যন্ত্রে রুখে দাড়াতে হবে’
10-08-2015 10:50AM