আখাউড়ায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, পৌর মেয়র ও চেয়ারম্যানকে শোকজ

  08-05-2024 10:44AM

পিএনএস ডেস্ক : নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল ও উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনকে শোকজ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের দু’জনকে আগামী ৮ মে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।

রিটার্নিং অফিসার স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মুরাদ হোসেন ভূঁইয়ার সমর্থনে আনারস প্রতীকের পক্ষ নিয়ে সোমবার বিকেলে মোগড়া ইউনিয়ন কার্যালয়ে পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন আচরণবিধি ভঙ্গ করে মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নির্বাচনী প্রচারপ্রচারণায় বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে প্রতিদ্বন্দ্বী ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেনকে ‘কুলাঙ্গার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল। এরই প্রেক্ষিতে তাদের দু’জনকেই কারণ দর্শাতে বলা হয়।

রিটার্নিং অফিসার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্যে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন তারা দুজনেই নির্বাচনী বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করেছেন। এটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০১৬ বিধিমালা এর ৬ ও ১৮ পরিপন্থী। মঙ্গলবার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনকে স্বশরীরে হাজির হয়ে বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না সে বিষয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বৈঠকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরমেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘এবার আর কোনো নয়ছয় নয়। আমরা দেখবো কোন ওয়ার্ডে কোন গ্রামে কে জামায়াত-বিএনপি ও এন্টি আওয়ামী লীগ। আমরা তাদেরকে চিহ্নিত করবো। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে জামায়াত-বিএনপি করবে, দলের দুঃসময়ে থাকবে না সেটা তো মানা হবে না।’

উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেনকে কুলাঙ্গার হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকজিল খলিফা বলেন, ‘আমরা মনিরের মতো কুলাঙ্গার না। তিনি আখাউড়ার কোন কোন নেতাকে নাকি লাঞ্ছিত করেছেন বলেন! আমি বলবো এসবের প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুত থাকুন।’

আওয়ামী লীগ সঙ্গে থাকায় মুরাদ হোসেনের জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদও ব্যক্ত করেন।

সেই বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাবেক আহ্বায়ক মো. জয়নাল আবেদীন, সাবেক সভাপতি ও প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর মুরাদের সমর্থনে সরে দাঁড়ানো শেখ বোরহান উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন প্রমুখ।

এই বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন বলেন, আমি ১৮ বছর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলাম। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। আমি তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নির্বাচন উন্মুক্ত এবং অবাধ সুষ্ঠু করার ঘোষণা দেওয়ায় আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। মেয়রের এমন বক্তব্য দুঃখজনক, তিনি কীভাবে এমন বক্তব্য দিতে পারেন।

উল্লেখ, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের আগামী ২১ মে আখাউড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আখাউড়া উপজেলায় কাগজে কলমে তিনজন প্রার্থী থাকলেও শেখ বোরহান উদ্দিন সরে দাঁড়ানোয় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে।

তারা হলেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন। মনির হোসেন ঘোড়া প্রতীক ও মুরাদ হোসেন আনারাস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করছেন।

পিএনএস/শাওন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন