পিএনএস ডেস্ক: প্রায় পাঁচ বছর পর সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু এবং নিজেদের মাঝে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে কাজ করতে রাজি হয়েছে চিরবৈরী দুই প্রতিবেশী ভারত এবং চীন। মঙ্গলবার নয়াদল্লির কর্মকর্তাদের বরাত ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
২০২০ সালে সীমান্তে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের পর উভয় দেশের সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটে। পরে উভয় দেশের মাঝে বিমান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায় এবং পাল্টাপাল্টি বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এই সংকটের অবসানে সম্প্রতি প্রতিবেশী এই দুই দেশ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সোমবার বেইজিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের মাঝে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, উভয় পক্ষই বিমান চলাচল পুনরায় শুরুর কাঠামোর বিষয়ে আলোচনা করবে।
মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের সঙ্গে শিগগিরই আবারও বিমান যোগাযোগ চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘সন্দেহ’ ও ‘বিচ্ছিন্নতা’ এড়িয়ে ‘পারস্পরিক সমর্থন এবং অর্জনে’ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা উচিত চীন ও ভারতের। এই বিষয়টি ভারতের পররাষ্ট্রসচিবকে জানিয়ে দিয়েছেন ওয়াং ই।
নয়াদিল্লির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের সুনির্দিষ্ট উদ্বেগজনক বিষয়গুলোর সমাধান এবং দীর্ঘমেয়াদী নীতিগত স্বচ্ছতা বজায় রাখা ও পারস্পরিক তথ্য বিনিময় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অব্যাহত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক হুমকি চীন এবং ভারতকে একসঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করছে।
ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তিনি চীনের ওপর শুল্ক আরোপ করবেন এবং ভারত চীনের একটি বৃহৎ বাজার। অন্যদিকে নয়াদিল্লি রপ্তানি ও অর্থনীতিকে ত্বরান্বিত করতে চীনা দক্ষতা, সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি চায়। উভয়পক্ষের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে এসব বিষয় উঠে এসেছে।
নয়াদিল্লির থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রধান হর্ষ পন্ত বলেছেন, চীনের অর্থনীতির জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি যদি বৃদ্ধি পায়, তাহলে ভারতের সঙ্গে চীন এমন এক ধরনের সম্পর্ক চাইবে; যা ২০২০ সালের তুলনায় অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে তুলনামূলকভাবে দুর্দান্ত হবে।
ভারত ও চীনের মাঝে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০২৪ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে চার শতাংশ বেড়ে ১১৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে; যার বেশিরভাগই চীন থেকে আমদানি করেছে ভারত।
এসএস
পাঁচ বছর পর বিমান যোগাযোগ চালু করছে ভারত-চীন
28-01-2025 07:15PM