পিএনএস ডেস্ক: রাজনীতিবিদরা হাত মেলাচ্ছে। আর তাই বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে ফেসবুকে এক পোস্টে এমন আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেন হাসনাত।
তবে তিনি কোন ঘটনায় এমন হতাশ হলেন তা ব্যক্ত করেননি। তার লেখাটা ছিল খুবিই সংক্ষিপ্ত। ‘রাজনীতিবিদরা হাত মেলাচ্ছে, আর বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে।’
মন্তব্য খোলাসা না করলেও তার ফেসবুক অনুসরণকারীরা রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ড এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপগুলো নিয়ে সন্দেহ এবং হতাশা প্রকাশ করে মন্তব্য করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসনাত আব্দুল্লাহ একটি গণমাধ্যমকে বলেন, রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একদফা (শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি) হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তাদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) সংবিধানপ্রীতি, মুজিবের ছবি সরানোর কারণে আমরা দেখলাম যে, গত ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য এই সংবিধানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা একটি দলের মাঝে এখন একটা প্রীতি দেখা যাচ্ছে। দেখলাম যে একটা বক্তব্য দেয়া হয়েছে যে, এটা (শেখ মুজিবের ছবি সরানো) ঠিক হয়নি। মোস্তাকের সঙ্গেও তুলনা করা হচ্ছে যে, মোস্তাক এই কাজ করেছিল।
রাজনীতির অগ্রজ এবং অনুজের মাঝে বিভাজন তৈরি হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, এই বিষয়গুলো দুঃখজনক। এই সংবিধানের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি। অথচ এই সংবিধানের অধীনে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকেই সরকার শপথ নিচ্ছে। এই বিষয়গুলো কোথাও না কোথাও বিপ্লব বা গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটে ঘাটতি তৈরি করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে গত রাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি লাল করে হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেন, ‘সাঈদ ওয়াসিম মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ। ১৩৪ শে জুলাই, ২০২৪’।
এদিকে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় এ নেতা মঙ্গলবার সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, কেউ অপরাধ করলে ইতিহাস ও জনগণ তা সিদ্ধান্ত নেবে। আওয়ামী লীগের মত সংকীর্ণমনা দল বিএনপি নয়। মুজিবের ছবি সরিয়ে দেয়া উচিৎ হয়নি। বঙ্গভবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো ঠিক হয়নি। খন্দকার মোশতাকও তার ছবি নামিয়েছিলেন আর জিয়াউর রহমান আবার টাঙিয়েছিলেন সেই ছবি।
যদিও কিছুক্ষণ পর আবার বিবৃতি দিয়ে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন তিনি। আগের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, আমি মনে করেছিলাম, বঙ্গভবনের দরবার কক্ষে যেখানে সব রাষ্ট্রপতির ছবি থাকে সেখান থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে। মূলত: ছবিটি সরানো হয়েছিল বঙ্গভবনের অন্য একটি অফিস কক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে শেখ মুজিবের ছবি রাখার বাধ্যতামূলক আইন করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী আইনের কোনো কার্যকারিতা থাকতে পারে না। অফিস-আদালত সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত।
গত রোববার (১০ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে সদ্য শপথ নেয়া মাহফুজ আলম এক ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘৭১ পরবর্তী ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দরবার হল থেকে সরানো হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে আমরা ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তার ছবি সরাতে পারিনি। তবে মানুষের ভেতরে জুলাই স্পিরিট যতদিন থাকবে তাকে আর কোথাও দেখা যাবে না।’
এসএস
বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে আশঙ্কা হাসনাতের
12-11-2024 05:42PM