ফিরে দেখা ২০২৪ : চব্বিশে নিভে গেছে যেসব তারা

  25-12-2024 10:14AM

পিএনএস ডেস্ক: বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে ২০২৪। দরজায় কড়া নাড়ছে নতুন বছর ২০২৫। শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়ে সকলেই স্মৃতি রোমন্থন করছেন গোটা বছরের। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী বছরটি ছিল বেশ ঘটনাবহুল। এই বছর পৃথিবী যেমন অনেক কিছু পেয়েছে তেমনি জীবনের ভ্রমণ শেষ করে এ বছরও বেশ কয়েকজন গুণী মানুষ চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। কেউ রোগে ভুগে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন, আবার কারও মৃত্যু অন্য সবার কাছে ছিল আকস্মিক খবর। সবার মৃত্যু স্বজনদের যেমন শোকাতুর করেছে, ভাবিয়েছে ও কাঁদিয়েছে, তেমনি সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও ভক্তদের বিষাদের সাগরে ডুবিয়েছে। তবে তারা বেঁচে থাকবেন কাজে, স্মৃতিতে। এ বছর বিভিন্ন অঙ্গনে যাদের হারিয়েছি, একনজরে তাদের দেখে নেওয়া যাক।

সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী
৫ এপ্রিল সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী মারা গেছেন। বি. চৌধুরী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের অনুরোধে ১৯৭৮ সালে রাজনীতি শুরু করেন। তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী ও পরে সংসদ উপনেতা হন। ১৯৯৬ সালে তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০০১ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং একই বছরের অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। ২০০৪ সালের ৮ মে বি. চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।

বাংলাদেশের প্রথম পতাকার নকশাকারদের অন্যতম শিব নারায়ণ দাশ
১৯ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম পতাকার নকশাকারদের অন্যতম শিব নারায়ণ দাশ মারা যান। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে ছাত্রদের পক্ষে পতাকা উড়িয়েছিলেন ছাত্রনেতা তৎকালীন ডাকসুর ভিপি আ স ম আবদুর রবসহ অন্য নেতারা। দেশ স্বাধীনের আগে এই পতাকার নকশাকারদের অন্যতম ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাশ।


কবি অসীম সাহা
১৮ জুন ২টার দিকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান কবি অসীম সাহা। সামগ্রিকভাবে সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১২ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। পরে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।

সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী
২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী রাত ৯টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।

জাতীয় কবির নাতি কাজী অনির্বাণ
৩ অক্টোবর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতি কাজী অনির্বাণ মারা গেছেন। তিনি কবির কনিষ্ঠতম পুত্র কাজী অনিরুদ্ধর বড় ছেলে। কাজী নজরুল ইসলামের সন্তানদের পরিবারের যে শাখাটি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় থাকতেন, কাজী অনির্বাণ ছিলেন তারই অন্যতম সদস্য। কাজী অনির্বাণ ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন একজন চিত্রশিল্পী।

টাটা গ্রুপের কর্ণধার রতন টাটা
৯ অক্টোবর ভারতের অন্যতম শীর্ষ শিল্পপতি ও টাটা গ্রুপের কর্ণধার রতন টাটা মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। রতন টাটা ছিলেন ভারতের অন্যতম বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান টাটা গ্রুপের ইমেরিটাস চেয়ারম্যান। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা ২১ বছর ধরে তিনি এ গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

অভিনয়শিল্পী জামালউদ্দিন হোসেন
১২ অক্টোবর টেলিভিশন ও মঞ্চনাটকের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী জামালউদ্দিন হোসেন কানাডার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় মারা গেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বেতার টেলিভিশন শিল্পী সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। জামালউদ্দিন হোসেন ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘রাজা রানী’, ‘চাঁদ বণিকের পালা’, ‘আমি নই’, ‘বিবি সাহেব’, ‘যুগলবন্দী’সহ কয়েকটি আলোচিত মঞ্চনাটক পরিচালনা করেছেন।

সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী
১৬ অক্টোবর দুপুর ১২টায় ‘অগ্নিকন্যা’ হিসেবে খ্যাত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তার জন্ম পিরোজপুরে ১৯৪২ সালের ৩০ জুন। তাঁর বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মতিয়া চৌধুরী। মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসন থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

কণ্ঠসৈনিক সুজেয় শ্যাম
১৮ অক্টোবর রাত ৩টার দিকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মুক্তিযুদ্ধের গানের শিল্পী ও একাত্তরের কণ্ঠসৈনিক সুজেয় শ্যাম। ১৯৪৬ সালে সিলেটে জন্ম নেওয়া সুজেয় শ্যামকে সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে একুশে পদক দেওয়া হয়। তার আগে ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক পান তিনি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নয়টি গানে সুর করেছিলেন সুজেয় শ্যাম, যেগুলো একাত্তরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গাওয়া হয়েছিল।

লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মবিন খান
৩১ অক্টোবর দেশের প্রখ্যাত লিভার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মবিন খান মারা যান। তার জন্ম ১৯৪৯ সালে। লিভার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ হেপাটোলজি সোসাইটির সভাপতি তিনি। দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লিভার রোগ গবেষণায় তার অবদান রয়েছে।

অভিনেতা মাসুদ আলী খান
৩১ অক্টোবর মারা যান একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা মাসুদ আলী খান। তার ক্যারিয়ার মঞ্চ নাটক দিয়ে শুরু হলেও ১৯৬৪ সালে ঢাকায় টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার পরপর নূরুল মোমেনের নাটক ‘ভাই ভাই সবাই’ দিয়ে ছোট পর্দায় মাসুদ আলী খানের অভিষেক হয়। আর সাদেক খানের ‘নদী ও নারী’ দিয়ে বড় পর্দায় তার পথচলা শুরু। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে প্রায় ৫০০ নাটকে বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

মালয়েশিয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী দাইম জয়নুদ্দিন
১৪ নভেম্বর মালয়েশিয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী দাইম জয়নুদ্দিন। তিনি মাহাথির মোহাম্মদের মন্ত্রিসভায় দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন।প্রথম মেয়াদে ১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দ্বিতীয় মেয়াদে ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কাজ করেন তিনি। ১৯৮২ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত পাঁচবার জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করেন জয়নুদ্দিন। দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।মাহাথির মোহাম্মদের অধীনে বিনিয়োগকারী-বান্ধব নীতি এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর বেসরকারীকরণের জন্য কৃতিত্ব পেয়েছিলেন জয়নুদ্দিন।তার সময়ে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শতকরা ৯ ভাগে পৌঁছেছিল।

সাবেক প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম
১৬ নভেম্বর মারা যান সাবেক প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিচারপতির পদের মেয়াদ ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যান। এর আগে ১৯৯২ সালের ১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হন। ২০০১ সালের ১৫ মে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রথম অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু
১৮ নভেম্বর মারা বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রথম অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে অধিনায়কত্ব করেন। দলটি মুক্তিযুদ্ধে আহত ও শরণার্থীদের সহায়তায় তহবিল সংগ্রহ এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনসমর্থন আদায়ে ভারতে বেশ কয়েকটি ফুটবল ম্যাচ খেলে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ ফুটবল দলেরও প্রথম অধিনায়ক ছিলেন পিন্টু।

সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. রুহুল আমিন
২৪ নভেম্বর মারা যান সাবেক প্রধান বিচারপতি বিচারপতি মো. রুহুল আমিন। তিনি দেশের ১৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০০৭ সালের ১ মার্চ যোগদান করেন। ২০০৮ সালের ৩১ মে অবসরে যান তিনি।

বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ
২৬ নভেম্বর মারা যান বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে তিনি একাডেমির উন্নয়ন ও বিকাশে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছেন। মহাপরিচালক হিসেবে তার কার্যকালে অভিধান প্রণয়ন ও প্রকাশ, ‘আনন্দ পঠন গ্রন্থমালা’ প্রকাশ, ‘তরুণ লেখক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন, একাডেমিতে গবেষণা, প্রকাশনা, প্রশিক্ষণ এবং একাডেমি প্রকাশিত বইয়ের বিপণন, একাডেমি প্রেসের আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।

এসএ গেমসে সোনাজয়ী শুটার সাদিয়া
০২ ডিসেম্বর এসএ গেমসে সোনাজয়ী শুটার সাদিয়া চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ২০১০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে সোনা জিতেছিলেন সাদিয়া সুলতানা। একই বছর জিতেছিলেন কমনওয়েলথ শুটিংয়ের সোনা। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে সেবার দলগত ইভেন্টে শারমিন রত্নার সঙ্গে মিলে জিতেছিলেন সোনা। ২০১৩ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ গেমসে সোনা জিতেছিলেন। এর পর থেকে অনেকটা অন্তরালেই ছিলেন তিনি।

গীতিকার ও সুরকার আবু জাফর
৬ ডিসেম্বর ভোরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’, ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে’ এমন অসংখ্য গানের গীতিকার ও সুরকার আবু জাফর। তার রচিত দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গান তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। বরেণ্য সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন তাঁর সাবেক স্ত্রী।

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় ফজলে স্বাধীন খোকন
৭ ডিসেম্বর মারা যান স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় ফজলে স্বাধীন খোকন। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠিত হয়েছিল ৩৫ জন খেলোয়াড় নিয়ে। রাজশাহী থেকে এই দলের একমাত্র সদস্য ছিলেন ফজলে স্বাধীন খোকন।

ভাষা সৈনিক ফজলুল হক
৯ ডিসেম্বর নাটোরের ভাষা সৈনিক ফজলুল হক। তিনি ১৯৫২ সালে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মাতৃভাষা বাংলার জন্য রাজপথে নেমে আন্দোলন করেছিলেন ফজলুল হক। ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছরেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাননি এ ভাষা সৈনিক।

রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার
১২ ডিসেম্বর সকাল ৮ টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।


প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ
১৩ ডিসেম্বর প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ মারা গেছেন। ৭৬ বছর বয়সে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত সুপার হোমের বাথরুমে পড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয় হেলাল হাফিজের। কর্তৃপক্ষ তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন
১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কিংবদন্তি তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন। ভারতীয় ধ্রুপদি সংগীতের একজন পুরোধা হিসেবে বিবেচনা করা হয় জাকির হোসেনকে। কিংবদন্তি তবলাবাদক আল্লারাখার প্রথম সন্তান জাকির হোসেনের জন্ম ১৯৫১ সালে ভারতের মুম্বাই শহরে।

নাগরিক ঐক্যের প্রধান উপদেষ্টা এসএম আকরাম
১৬ ডিসেম্বর মারা যান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও নাগরিক ঐক্যের প্রধান উপদেষ্টা এসএম আকরাম। তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে (অতিরিক্ত সচিব) ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবুল কালামের কাছে পরাজিত হলেও তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নিযুক্ত হন। ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সমর্থন দেন। ২০১২ সালে তিনি মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্যে যোগ দেন। ২০১৪ সালে সাত খুনের প্রতিবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। পরে তিনি নাগরিক ঐক্যের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পান ২০১৪ সালে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ
২০ ডিসেম্বর রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ (৮৫) মারা গেছেন। হাসান আরিফ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। তিনি ১৯৭০ সাল থেকে আইন পেশার সঙ্গে জড়িত আছেন। তিনি ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।

সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ
২১ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার সেন্তরা হাসপাতালে মারা যান সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ। বাংলাদেশি সংগীতশিল্পী এবং সুরকার। তিনি মাইলস ব্যান্ডের সদস্য। বর্তমানে তিনি মাইলসের বেজ গিটারিস্ট এবং প্রধান গায়ক। ব্যান্ডের বাইরে তিনি সলো ক্যারিয়ারে সুনাম অর্জন করেছেন। এছাড়াও বেশকিছু সলো কিংবা মিক্সড অ্যালবামে তার গান রয়েছে। তার মা সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগম এবং বাবা সুরকার কমল দাশগুপ্ত।

সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান
২৫ ডিসেম্বর মারা যান সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান। ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সরিষার তেল উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়ার মধ্য দিয়ে সিটি গ্রুপের কার্যক্রম শুরু হয় ফজলুর রহমানের হাত ধরে। প্রথম উদ্যোগ সফল হওয়ার পর সিটি গ্রুপ নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ শুরু করে। এ সময় মূলত উৎপাদন, শিল্পোদ্যোগ ও ট্রেডিংয়ে বিনিয়োগ করা হয়। নব্বই দশকের গোড়ার দিকে আরও প্রকল্প এবং উদ্যোগ হাতে নেয় সিটি গ্রুপ। বর্তমানে শিল্পগোষ্ঠীটির অধীনে রয়েছে ৪০টির বেশি প্রতিষ্ঠান।

‘মুজিব’ সিনেমার পরিচালক শ্যাম বেনেগাল
বলিউড ইন্ডাস্ট্রির বিখ্যাত পরিচালক শ্যাম বেনেগাল আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। মুম্বাইয়ের ওয়াকহার্ট হাসপাতালে ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। শ্যাম বেনেগালের হাত ধরে উঠে এসেছিলেন শাবানা আজমী, নাসিরউদ্দিন শাহ, স্মিতা পাতিলের মতো জাদরেল অভিনয়শিল্পী।


পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন