অবৈধ দখলের অভিযোগ বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের বিরুদ্ধে

  31-08-2024 07:58PM

পিএনএস ডেস্ক: কক্সবাজারের সুগন্ধা এলাকায় এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে।

বুধবার ও বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সুগন্ধা পুলিশ বক্সের পাশের খালি জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে তারা। যদিও পরবর্তীতে কয়েকটি দোকান উচ্ছেদ করা হয়।

ভুক্তভোগী সচ্চিনান্দন সেনগপ্ত জানান, পৌর যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক মো. জয়নাল, তার দুই ভাই নেজাম ও হত্যা মামলার আসামি কালাম, কক্সবাজার সরকারি কলেজের সাবেক সদস্য সচিব মো. বাপ্পী, শীর্ষ সন্ত্রাসী বুলেট জসিম উদ্দিন, আব্দুল গফুর, নুরুল আজিম, মো. ফয়সাল, হেলাল ও মো. মালেকরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করেন।

দখলের বিষয়টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করেছেন ভুক্তভোগী সচ্চিনান্দন সেনগপ্ত। তিনি জানান সরকার পতনের দিনও তার মার্কেট লুটপাট করেছে। এ নিয়ে তার পক্ষ থেকে ওবাদুর রহমান নামের একজন বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকদিন আগে সুগন্ধা ডেসটিনির পুরনো ভবনে দখলের পরিকল্পনা করে যুবদল ও বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী। শুক্রবার গভীর রাতে দোকান নির্মাণ শুরু করেন যুবদলের নেতা জয়নাল, তার দুই ভাই নেজাম, কালাম, কলাতলী চৌদ্দগ্রাম সমাজ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সুমন, হেলালসহ আরও কয়েকজন যুবদল নেতা।

তবে এক পর্যায়ে পৌর বিএনপির সদস্য সেলিম রেজা ও কয়েকজন স্থানীয় যুবক দোকানগুলো উচ্ছেদ করেন।

সেলিম রেজা জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল ভাইয়ের নির্দশনা আছে দখলদার ও অপরাধীদের প্রতিহত করার। সে নির্দেশনার আলোকে আমি দখল ঠেকানোর চেষ্টা করেছি।

স্থানীয়রা বলছেন, ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কক্সবাজার শহরে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী। হোটেল দখল, জমি দখল, চাঁদাবাজির মতো কর্মকাণ্ডে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীদের নাম এসেছে।

কক্সবাজার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আলমগীর চৌধু্রী বলেন, গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে দখলবাজির অভিযোগ’ একটি স্ট্যাটাস দেখে তদন্ত শুরু করি আমরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা অনুযায়ী দখলকৃত স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। ভবিষ্যতে কোন দলের পরিচয়ে দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজার পৌর যুবদলের আহবায়ক আজিজুল হক সোহেল জানান, দখলের বিষয়ে জয়নালের নাম আসলেও জয়নাল আমাকে বলেছেন সে নিজে গিয়ে দোকানগুলো উচ্ছেদ করেছেন। তিনি আরও বলেন, যুবদলে দখলবাজ অপরাধীদের কোন স্থান নেই। অভিযোগের প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি অবগত করা হলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কেন্দ্রীয় মৎস্য মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান কাজল বলেন, বিএনপির নাম দিয়ে যারা দখল-বেদখল ও চাঁদাবাজি করছে তারা বিএনপির নৈতিক আদর্শ বহন করে না। তাদের প্রতিহত করতে হবে। আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে পার্টি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে যুবদল নেতা মো. জয়নাল ও যুবদল নেতা সুমনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন