ভিডিওকলে নববধূ ও প্রবাসী প্রেমিকের আত্মহত্যা, যা বলছেন নেটিজেনরা

  28-10-2024 02:32PM

পিএনএস ডেস্ক : কুমিল্লায় বিয়ের ১২ দিন পর স্বামীর বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন নববধূ। একই সময় ওই নববধূকে ভিডিওকলে রেখে আত্মহত্যা করেছেন তার প্রবাসী প্রেমিক।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলার লালমাইয়ে উপজেলার বেতুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গত ১৪ অক্টোবর লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বেতুয়া (কৃষ্ণপুর) গ্রামের রংমিস্ত্রি আরিফুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় সদর দক্ষিণ থানাধীন মাটিয়ারা গ্রামের জামাল হোসেনের মেয়ে নিহত গৃহবধূ খাদিজা আক্তার ঊর্মির (১৬)। অন্যদিকে তার প্রেমিক কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব জোড়-কানন ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে সাফায়েত হোসেন। ঊর্মির বিয়ের ১৩ দিনের মাথায় প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিওকলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করে। ওই সময় তার ওমান-প্রবাসী প্রেমিক সাফায়েত হোসেনও আত্মহত্যা করেন। তাদের দুজনের কাছ থেকেই চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটে একসঙ্গে দাফনের আকুতি জানিয়েছেন নববধূ।

ঊর্মির মরদেহের কাছ থেকে পাওয়া চিরকুটে লেখো ছিল, ‘চাইছিলাম দুজনে একসঙ্গে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিল না। এটা সত্যি, ও আমার প্রথম সাথি। ওরে আমি বিয়ে করছি। কিন্তু ওর জায়গায় আমি অন্য কাউরে দিতে পারি নাই, পারবও না। তোমরা সুখে থেকো। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর ফ্যামিলিকে জেলের ভাত খাওয়াইতে। তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম। ওরে আমার সঙ্গে নিয়ে গেলাম। আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা থাকবে। বাবা-মা ও ভাই-বোনের কাছে একটা আবদার, দুনিয়াতে যেহেতু একসঙ্গে থাকতে দেও নাই, আমাদের দাফনটা যেন একসঙ্গে হয়। এক দিন আগে-পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে। সে চাওয়াটা যেন পূরণ করেন আপনারা।’

অন্যদিকে প্রবাসী সাফায়াতও মৃত্যুর আগে চিরকুটে লিখে যান। এই কাহিনীর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই তাদের কষ্টের অনুভূতি প্রকাশ করে জান্নাত কামনা করেছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, আত্মহত্যা হারাম। মহান আল্লাহ এ কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তাই এসব কাজ করা মানে সারাজীবন জাহান্নামে থাকা। আবার কেউ মৃত্যুর জন্য তাদের মা বাবাকে দায়ী করেছেন।

মনির হোসেন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটা বাবা মায়ের উচিত ছেলে মেয়ের মনের কথাটা বের করে তারপর বিয়ে দেওয়া। ঘটনাটা পড়ে কষ্ট পেলাম। এদের জন্য তবুও দোয়া রইল আল্লাহ ক্ষমাকারী।

আসতস রয় নামে একজন লিখেছেন, পরিবার তার পছন্দের মানুষের সাথে বিয়ে দিলেই পারতো। কিন্তু পরিবার তা না করে তার মতের বিরুদ্ধে অন্য জায়গায় বিয়ে দিলো। এজন্য দুটি জীবন ধ্বংস হয়ে গেল, এসবের জন্য দায়ী পরিবার থাকবে।

মোস্তাফিজুর রহমান সাদ্দাম নামে একজন লিখেছেন, ধর্মীয় জ্ঞান আর নীতি নৈতিকতার শিক্ষা না থাকলে এরকমই হয়। স্বামীকে রেখে পরপুরুষের সাথে কবরে থাকতে চায়, কি পরিমাণ বেহায়া আর অশিক্ষা বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে কল্পনাও করা যায় না। এরা নিজেদেরকে সিনেমার নায়ক নায়িকা আর পৃথিবীটাকে সিনেমাহল ভাবে।

কেউ লিখেন, আত্মহত্যা করা মানে সারাজীবন জাহান্নামে থাকা। তাদের জান্নাত কামনা করে দোয়া করাও ঠিক হবে না। তারা তো শয়তানের কাজ করেছে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন